ইমা এলিস/ বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক ::
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টনে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব নিউ ইংল্যান্ড (বেইন)-এর গত দু’দিনের শুক্র ও শনিবার (১০ ও ১১ নভেম্বর) নির্বাচনের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালনকালে ক্যামব্রিজের মোরস এলিমেন্টারি স্কুলে নির্বাচন কমিশনারদের হাতে কয়েকদফায় লাঞ্ছিত হয়েছেন নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য (হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস) ও রিপাবলিকান পার্টির সদস্য আবুল খান শাহীন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হ্যাম্পশায়ারের রকিংহাম-৩০ এর জনপ্রতিনিধিত্ব করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাংলা সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এ খবর জানিয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বোস্টনে বেইনের নির্বাচনে দেখতে গিয়ে নানা অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি দেখতে পান। এসব বিষয় নিয়ে তিনি নির্বাচন কমিশন সালাউদ্দিন খান সৈকতকে বেশ কয়েক দফায় অবহিত করেন। তিনি দাঁড়িয়ে ভোটারদের যাতায়াতসহ বিভিন্ন বিষয় দেখাশোনা করতে থাকলে সহকারী নির্বাচন কমিশনার মোঃ আব্দুল জলিল চৌধুরী উত্তেজিত হয়ে তার কাছ থেকে আবুল খান শাহীনকে দূরে সরে যেতে বলেন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা চালাচালির এক পর্যায়ে নির্বাচন কমিশনার সালাউদ্দিন খান সৈকতের চোখের ইশারায় আবুল খান শাহীন মারার জন্য চেয়ার উত্তোলন করেন। উপস্থিত সকলেই এ ঘটনা দেখে হতবাক হয়ে উঠেন। তিনি সুষ্ঠ নির্বাচনের স্বার্থে ঐদিন পুলিশে কোন অভিযোগ করেননি। পরদিন শনিবার ১১ নভেম্বর তিনি পুনঃরায় নির্বাচনের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালনের জন্য সকালেই মোরস এলিমেন্টারি স্কুলে পৌঁছান। সারাদিন তার দায়িত্ব পালন শেষে সন্ধার দিকে ভোট গ্রহণ শেষ না হতেই অন্যদিকে ভোট গণনা শুরু করেন। তার দৃষ্টিতে কেন্দ্রের ভেতরে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি চলছিলো।
এক পর্যায়ে বিচারকের নির্দেশ অমান্য করে খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদের প্রতিনিধিদের অসম্মতিতে জোর পূর্বক অগ্রিম ভোট (এক সপ্তাহ আগে রাতের অন্ধকারে গ্রহন করা) ৬৯৪টি ভোট যুক্ত করার সিদ্ধান্তের কথা শুনে তিনি প্রতিবাদ জানান এবং কেন্দ্র ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন। এ সময় নির্বাচন কমিশনার সালাউদ্দিন খান সৈকত তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালিসহ লাঞ্ছিত করে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। পরে তিনি কেন্দ্র থেকে বের হয়ে আসেন। তিনি নিজের সম্মান বজায়ের স্বার্থে পরে দু’দিনের পৃথক পৃথক ঘটনা্র বিবরণ জানিয়ে ক্যামব্রিজ পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি গোয়ন্দা পুলিশ তদন্ত করছেন বলে জানান নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ও রিপাবলিকান পার্টির সদস্য আবুল খান শাহীন।
নির্বাচন কমিশনার সালাউদ্দিন খান সৈকত নিজের ক্ষমতাবলে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশকালে ছবি, ভিডিও এবং মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ/বন্ধ ঘোষনা করেন।অথচ বেইনের সাবেক সভাপতি পারভীন বাবু এবং তার আত্মীয় স্বজন এমনকি সহকারী নির্বাচন কমিশনার ও পুলিং এজেন্টরা কমিশনারদের চোখের সামনেই ছবি ও ফেসবুকে লাইভ ভিডিও প্রকাশ করেছেন কিন্ত সালাউদ্দিন খান সৈকত তাদের কোন বাধা নিষেধ করননি।
নির্বাচন কমিশনের প্রধান সালাউদ্দিন খান সৈকত নির্বাচন পরিদর্শকের জন্য একজন মিডিয়াকর্মীকে অনুমতি দেন। তিনি কয়েক ঘন্টা কেন্দ্রের ভেতরে অবস্থান করে সব কিছু অবলোকন করেন। পরে বেইনের অনির্বাচিত সাবেক সভাপতি পারভীন বাবু আপত্তি জানালে নির্বাচন কমিশনার ও পুলিশের সহায়তায় তাকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেন। কারণ ওই সংবাদকর্মী গত বছর অক্টোবর মাসে বেইনের অনির্বাচিত সাবেক সভাপতি পারভীন বাবুর জেলবন্দি লম্পট স্বামীর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি ধারাবাহিক সংবাদ পরিবেশন করেন। তার সেই সংবাদ দেশ ও প্রবাসে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ নারীর ধর্ষণ চেষ্টা শ্লীলতাহানীর অপরাধে পারভীন বাবুর স্বামী এখনও কারাগারেই রয়েছেন।