শীতের তীব্রতাকে উপেক্ষা করে পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিলকুড়ালিয়ার খাসজমিতে বোরো ধান রোপনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে ভূমীহীন নারী পুরুষ। বিলপাড়ের ভূমিহীন পরিবারের নারী-পুরষ সকাল থেকে বিলে নেমে উৎসবমুখর পরিবেশে চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন।  শুধু নারী-পুরুষই নয়, তাদের সাথে কাজে নেমেছেন তাদের শিশু সন্তানরাও।

উপজেলার বিলকুড়ালিয়া মৌজার ৩শ’ ৭১ একর খাসজমি বিলপাড়ের ১৫টি গ্রামের সংগঠিত ১০ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় ১ হাজার ৩শ’ ভূমিহীন, কৃষক, ক্ষেতমজুর পরিবার ১৮ বছর যাবত নিজেদের ভোগদখলে রেখে ওই জমিতে চাষাবাদকৃত ফসলে তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আসছেন।
চলমান বোরো মৌসুমে বিলের এক নং সিটে ২৫টি শ্যালো ইঞ্জিন, দুই নং সিটে ৭টি শ্যালো ইঞ্জিন চালিত অগভীর নলকূপ, দু’টি গভীর নলকুপ এবং একটি মিনি গভীর নলকূপের সাহায্যে পানি সেচ ব্যবস’ায় বোরো ধানের চারা রোপন শুরু হয়েছে।

শুক্রবার সকালে বিলকুড়ালিয়ার খাসজমিতে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, উৎসবমুখর পরিবেশে মাঠে ভূীমহীন নারী-পুরষ উভয়েই কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। শুধু নারী-পুরষই নয়, তাদের শিশু সন্তানও মাঠে তাদের কাজে সহায়তা করছে। শীতের তীব্রতাকে উপেক্ষা করে প্রচন্ড ঠান্ডা পানি ও মাটির মধ্যে একদিকে চলছে জমিতে পানি দিয়ে মাঠ পরিচর্যার কাজ। অন্যদিকে চলছে জমিতে মই দিয়ে রোপনের উপযোগী করে তোলার কাজ। পুরুষের পাশাপাশি নারী ও তাদের শিশু সন্তানরা মাঠের একপাশে চারা তুলতে ব্যস্ত।

চাটমোহরস’ ভূমিহীন উন্নয়ন সংস’া সূত্রে জানা যায়, ভূমিহীন উন্নয়ন সংস’া সূত্র জানায়, বিগত ১৯৯৭-৯৮ সন থেকে ২০০৮-০৯ পর্যন্ত ১১টি অর্থ বছরে প্রতি একর ৫শ’ টাকা হারে লীজমানি বাবদ সরকারকে রাজস্ব দিয়ে একসনা লীজের ডিসিআর পেয়েছে ভূমিহীনরা। সূত্র আরো জানায়, একসনা লীজ প্রক্রিয়া উচ্চ আদালতে রীট মামলার কারণে দুই বছর স’গিত ছিলো। চলমান ২০১১-১২ অর্থ বছরের একসনা লীজ নবায়নের জন্য স’ানীয় সাংসদ মকবুল হোসেনের সুপারিশ নিয়ে ভূমিহীনেরা গত ২০১১ সালের ১০ নভেম্বর পাবনা জেলা প্রশাসক’র কাছে দরখাস্ত প্রদান করেছেন।

ভূমিহীন উন্নয়ন সংস’া (এলডিও)’র নির্বাহী পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষক আতাউর রহমান রানা জানান, সরকার পক্ষে জেলা প্রশাসক পাবনার নামে আরএস রেকর্ডের এক নং খাস খতিয়ানভূক্ত ৩৭১.২৩ একর আবাদি কৃষি খাসজমি দ্রুত ভূমিহীনদের মাঝে একসনা লীজ নবায়ন করতে সংশ্লিষ্ট রাজস্ব প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।

তিনি আরো বলেন, এই খাসজিম নিয়ে পাবনার কগনাইজিং আদালতে চলমান এমআর ১৪৮/৬১ মামলায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারায় ক্রোকাদেশ বিলকুড়িালিয়ার খাসজমি হতে প্রত্যাহার করে নীতিমালা অনুযায়ী ভোগদখলে থাকা প্রকৃত ভূমিহীন, কৃষক, ক্ষেতমজুরের মাঝে স’ায়ী বন্দোবস্ত প্রদান করলেই বিলকুড়ালিয়ার বিরাজমান ৫০ বছরের সংকট নিরসন হবে।

কলিট তালুকদার (পাবনা প্রতিনিধি)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here