বেলজিয়ামের লিজ শহরে এক বন্দুকধারীর হামলা ও গুলিতে কমপক্ষে চারজন মারা গেছে। পরে হামলাকারী নিজের কাছে থাকা গ্রেনেডের বিস্ফোরণে নিজেকেও উড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ১২৫ জন। খবর: বিবিসি ও আল-জাজিরা অনলাইন।
মঙ্গলবার রাতে ৩৩ বছরের যুবক নুরদীন আমরানি শহরের একটি বেকারির ছাদে উঠে জনাকীর্ণ স্কয়ারের দিকে প্রথমে গ্রেনেড ছুড়ে মারে। এরপর এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে।
এতে এক শিশু, দুজন কিশোর ও ৭৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা মারা যায়। পরে নুরদীন আমরিন নিজের মাথায়ও গুলি করে মারা যায়।
লিজ শহরের প্লেইস সেন্ট ল্যামবার্ট স্কয়ার হলো বড় দিন উদযাপনের প্রধান কেন্দ্র। বড় দিন ঘিরে এখানে প্রচুর লোকের সমাগম ঘটে। তবে এবার খারাপ আবহাওয়ার বড় দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পিছিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি বেলজিয়ান পুলিশ নুরদীনের বাসায় অবৈধ মাদক উদ্ধারে হানা দিয়েছিল। এ সময় তারা মাদক না পেলেও অবৈধ অগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে।
এরআগে ২০০৮ সালে নুরদীনকে অবৈধ অগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক চাষের দায়ে আদালত প্রায় পাঁচ বছর কারাদণ্ড দিয়েছিল।
তবে বেলজিয়ামের ফেডারেল ক্রাইসিস সেন্টার হামলাকে নিছক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড হিসেবে দেখছে। তারা এটাকে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে দেখছে না। তবে হামলাকারীর সত্যিকার অর্থে কী কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
হামলার পর ঘটনাস্থলে ছুটে যান বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী এলিও ডি রুপোও। তিনিও এটিকে সন্ত্রাসী হামলা না বলে নিছক একটি হত্যাযজ্ঞ বলে আখ্যায়িত করেছে।
তিনি বলেন, ‘নিহতের ঘটনায় সমগ্র দেশবাসী ব্যথিত। এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা মাত্র। এর সাথে সন্ত্রাসবাদের কোনো সম্পর্ক নেই।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নুরদীনের আচরণ দেখে মনে হচ্ছিল- ‘সে যত বেশি সম্ভব মানুষ খুনে’ মরিয়া। এজন্য একের পর এক গুলিবর্ষণ করতে থাকে। এতেই ক্ষান্ত না হয়ে বিকট শব্দে গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটায়।
এ ঘটনায় উপস্থিতরা দিগ্বিদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। অল্প সময়ের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে এলাকার দখল নেয়। শহরে কেন্দ্রস্থলে সব ধরনের চলাচল বন্ধ করে দেয়। এছাড়া আকাশে হেলিকপ্টার দিয়ে টহল অব্যাহত রাখে।
পরে বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী এলিও ডি রুপো, রাজা দ্বিতীয় অ্যালবার্ট ও রানী পাওলা এলাকাটি ঘুরে দেখেন।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/আন্তর্জাতিক ডেস্ক