মালিক উজ জামান, যশোর প্রতিনিধি ::

যশোরের স্থলবন্দর বেনাপালসহ দেশের আটটি পৌরসভায় ভোটের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ওইসব পৌরসভায় আগামী ১৭ জুলাই ভোটগ্রহণ করা হবে। এদিকে নির্বাচনের তফশিল ঘোষনা হতেই বেনাপোল আনন্দময় পরিবেশ বিরাজ করছে। চারিদিকে চলছে ভোটের আনন্দ। কারা প্রার্থী হবে কারা সমর্থক এসব নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা। সাবেক মেয়র আশরাফুল আলম লিটন ও মফিজুর রহমান সজন মেয়র পদপ্রার্থী। আওয়ামীলীগের দুই বলয়ের প্রার্থী এই দুই জন। জয়ে আশাবাদি দুজনেই।

ওই দিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হবে। বুধবার নির্বাচন
কমিশনের (ইসি) উপসচিব আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিতে প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ১৮ জুন। মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই ১৯ জুন, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ জুন। আর ভোটগ্রহণ ১৭ জুলাই। চট্টগ্রামের দোহাজারী, পিরোজপুরে ভান্ডারিয়া ও মঠবাড়িয়া, শরীয়তপুরের গোসাইরহাট, কুমিল্লার দেবিদ্বার, চাঁদপুরের ছেংগারচর, যশোরের বেনাপোল ও সিরাজগঞ্জের তাড়াশসহ মোট আটটি পৌরসভায়
এদিন ভোট হবে। এতদিন দীর্ঘ সময় ধরে প্রশাসক দিয়ে চলছিল বেনাপোল পৌরসভা। ফলে সেবা বঞ্চিত ছিলেন বেনাপোল পৌরবাসী।

পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বেনাপোলকে পৌরসভা হিসেবে ঘোষণা করে। ২০১১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বেনাপোল পৌরসভা প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পায়। ২০০৬ সাল থেকে প্রশাসক নিয়োগে চলে পৌরসভা। ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি বেনাপোল পৌরসভার প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল আলম লিটন। ৫ বছর পর ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি পৌরসভার মেয়াদ শেষ হয়। এ সময় নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও সীমানা জটিলতায় আদালতে মামলা থাকায় আটকে যায় নির্বাচন। মেয়র লিটন একটানা ক্ষমতায় থেকে যান ১২ বছর।

স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন ২০০৯-এর ধারা ৮-এর সংশোধনক্রমে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) সংশোধন আইন, ২০২২-এর ধারা ৪ অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ বেনাপোল পৌর পরিষদকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। ২০০৯- এর ধারা ৪২-এর সংশোধনক্রমে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) সংশোধন আইন ২০২২-এর ধারা ৯ অনুযায়ী ২২ সালের ২৭ এপ্রিল শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নারায়ন চন্দ্র পালকে পৌর প্রশাসক নিয়োগ করেন। তিনি ওই সালের ৫ মে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আবারও নতুন করে ছয় মাসের জন্য প্রশাসকের দায়িত্ব বৃদ্ধি করে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি শার্শার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা ইসলামকে পৌর প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, বেনাপোল পৌরসভা যশোর জেলার শার্শা উপজেলার একটি ক শ্রেণীর পৌরসভা । যশোর জেলার সীমান্ত ঘেঁষা দেশের বৃহত্তর স্থলবন্দর বেনাপোল।

আমদানি-রপ্তানিতে দেশের সিংহভাগ রাজস্ব আদায় হয় এ স্থল বন্দর দিয়েই। গুরুত্বপূর্ণ এ স্থল বন্দরকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে বেনাপোল পৌরসভা। দীর্ঘদিন সীমানা সংক্রান্ত জটিলতার মামলার অজুহাতে বেনাপোল পৌরসভার নির্বাচন বন্ধ থাকায় কাঙ্খিত উন্নয়ন, নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পৌরবাসী।পর পর দুইজন প্রশাসক নিয়োগের ১১ মাস শেষ হলেও নেই কোন
নির্বাচনের তোড়জোড়। যেখানে সংশোধিত সংবিধানে বলা হয়েছিলো প্রশাসক নিয়োগের ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার কথা।

স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন অনুযায়ী কোনো নির্বাচিত মেয়রের মেয়াদ পাঁচ বছর উত্তীর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই পৌরসভা বিলুপ্ত হবে। সেখানে সর্বোচ্চ ১৮০ দিনের জন্য সরকার মনোনীত প্রশাসক নিয়োগের বিধান রয়েছে। তবে একজন প্রশাসক কোনোক্রমেই একসঙ্গে ১৮০ দিনের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পৌরসভার ক্ষেত্রে ব্যক্তি বা সরকার মামলার বিরুদ্ধে আপিল করায় বছরের পর বছর নির্বাচন না দিয়ে সেগুলো প্রশাসক দিয়ে চালানো হচ্ছে। পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বেনাপোলকে পৌরসভা হিসাবে ঘোষণা করা হয়। ২০১১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বেনাপোল পৌরসভা প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পান স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে। ২০০৬ সাল থেকে প্রশাসক নিয়োগে চলছে পৌরসভাটি।

২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি বেনাপোল পৌরসভার প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল আলম লিটন। ৫ বছর পর ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি পৌরসভার মেয়াদ শেষ হয়। এ সময় নির্বাচন হবার কথা থাকলে সীমানা জটিলতায় আদালতে মামলা থাকায় আটকে যায় নির্বাচন। মেয়র লিটন একটানা ক্ষমতায় থেকে যান ১২ বছর।
স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন ২০০৯ এর ধারা ৮ এর সংশোধনক্রমে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) সংশোধন আইন, ২০২২ এর ধারা ৪ অনুযায়ী মেয়াদ উত্তীর্ণ বেনাপেলের পৌর পরিষদকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

২০০৯ এর ধারা ৪২ এর সংশোধনক্রমে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) সংশোধন আইন ২০২২ এর ধারা ৯ অনুযায়ী ২২ সালের ২৭ এপ্রিল শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নারায়ণ চন্দ্র পালকে পৌর প্রশাসক নিয়োগ করে। তিনি ওই সালের ৫ মে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আবারও নতুন করে ছয় মাসের জন্যে প্রশাসকের দায়িত্ব বৃদ্ধি করে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি শার্শার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা ইসলামকে পৌর প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

এদিকে নির্বাচন না হওয়ায় ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পৌরবাসী। প্রথম শ্রেণীর এ
পৌরসভায় দীর্ঘদিন ধরে নতুন কোন প্রকল্প না থাকায় নতুন সড়ক, ড্রেন, সড়কবাতি, সুপেয় পানি সরবরাহসহ কাঙ্খিত উন্নয়ন স্থবির হয়ে পড়েছে। ময়লা আবর্জনাও ঠিকমত পরিস্কার করা হয় না। দেশের সর্ববৃহত্তম স্থল বন্দর রয়েছে এ পৌরসভায়। প্রতি বছর সরকার প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে থাকে এই বন্দর থেকে। বেনাপোল ইউনিয়নের ১১টা গ্রামের অংশ নিয়ে ১৭.৪০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ পৌরসভায় প্রায় দশ হাজার পরিবারের এক লাখ ২০ হাজার মানুষ বসবাস করেন।

বেনাপোল পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন বলেন, আদালতে মামলা থাকায় দীর্ঘদিন ভোট হয়নি। দীর্ঘদিন পৌরসভার নির্বাচন না হওয়ায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। ফলে কাঙ্খিত উন্নয়ন বঞ্চিত নাগরিক সমাজ।

বেনাপোল পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ¦ এনামুল হক মুকুল জানান, দীর্ঘদিন এ পৌরসভার নির্বাচন বন্ধ থাকায়
আন্তর্জাতিকভাবে বেনাপোল পৌরসভাকে হেয় হতে হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী দেশের লোক বেনাপোলে এসে যখন শুনতে পায় দীর্ঘ ১২ বছর ধরে বেনাপোল পৌরসভার নির্বাচন হয়নি, তখন আমাদের দেশের সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।

যশোর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ পরিচালক মো: হুসাইন শওকত কিছুদিন পূর্বে মিডিয়াকে জানান, বেনাপোল পৌরসভার সীমানা জটিলতার মামলায় দীর্ঘদিন নির্বাচন সম্ভব হয়নি। এরপর ২০২২ সালের ৫মে বেনাপোল পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দ্বারা যে কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব সেটা প্রশাসক দিয়ে সম্ভব না।

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজল ফারুকী মার্চে জানান, দেশের ৩২৯টি পৌরসভার মধ্যে যশোরের বেনাপোলসহ আটটিতে নির্বাচন করা যায়নি। এগুলো নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলমান ছিল।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here