স্টাফ রিপোর্টার :: র‌্যাগিংয়ে জড়িত থাকায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আহসানউল্লাহ ও সোহরাওয়ার্দী আবাসিক হলের ৯ ছাত্রকে হল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।

একই সঙ্গে একাডেমিক কার্যক্রম ৪ থেকে ৭ টার্ম পর্যন্ত বহিষ্কৃত হয়েছেন তারা। এছাড়া আহসানউল্লাহ হলের চার ছাত্রকে সতর্ক করা হয়েছে এবং সোহরাওয়ার্দী হলের ১৭ শিক্ষার্থীকে হল থেকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার ও সতর্ক করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে বুয়েট ক্যাম্পাসে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক এবং বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনের সদস্য সচিব মিজানুর রহমান এসব তথ্য জানান।

গত ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে বুয়েটে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করছেন শিক্ষার্থীরা।

ফাহাদ হত্যার বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনের একপর্যায়ে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরতে প্রশাসনকে শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি পূরণের শর্ত দেন। সেই তিন শর্তের দ্বিতীয়টি ছিল বুয়েটের আহসানউল্লাহ, সোহরাওয়ার্দী ও তিতুমীর হলে আগে ঘটে যাওয়া র‌্যাগিংয়ের ঘটনাগুলোতে জড়িতদের বিচার ও শাস্তি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আহসানউল্লাহ হলের ছয় শিক্ষার্থীকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিভিন্ন মেয়াদে (৪ থেকে ৭ টার্ম) বহিষ্কার ও হল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা হলেন- সব্যসাচী দাস, সৌমিত্র লাহিড়ী, প্লাবন চৌধুরী, নাহিদ আহমেদ, অর্ণব চৌধুরী ও ফরহাদ হোসেন।

এ ছাড়া এই হলের ভবিষ্যতের সতর্কতা পাওয়া চার শিক্ষার্থী হলেন- মো. তাসনিম ফারহান, লোকমান হোসেন, শাফকাত বিন জাফর ও তানজির রশিদ আবির।

একই অভিযোগে সোহরাওয়ার্দী হলের তিন শিক্ষার্থীকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিভিন্ন মেয়াদে (৪ থেকে ৭ টার্ম) বহিষ্কার ও হল থেকে আজীবন বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। এই তিনজন হলেন- মো. মোবাশ্বের হোসেন, এ এস এম মাহাদী হাসান ও আকিব হাসান রাফিন।

এ হলের ১৭ শিক্ষার্থীকে হল থেকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার ও ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা হয়েছে। তারা হলেন- কাজী গোলাম কিবরিয়া, সাকিব হাসান, মো. সাজ্জাদুর রহমান, সাকিব শাহরিয়া, শেখ আসিফুর রহমান, মো. রাইয়ান তাহসিন, মেহেদী হাসান, তৈয়ব হোসেন, এ এফ এম মাহফুজুল কবির, মো. বখতিয়ার মাহবুব, সৈয়দ শাহরিয়ার আলম, মো. তৌফিক হাসান, মো. কুতুবুজ্জামান, মোহাম্মদ তাহমিদুল ইসলাম, ফেরদৌস হাসান, মো. আল-আমিন ও তাহাজিবুল ইসলাম।

সাংবাদিকদের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, আহসানউল্লাহ ও সোহরাওয়ার্দী হলের র‌্যাগিংয়ের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন আমরা হাতে পেয়েছি। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী ওই দুই হলে র‌্যাগিংয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিতুমীর হলের র‌্যাগিংয়ের ঘটনার অধিকতর তদন্তের জন্য আরেকটি কমিটি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল- সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি ও র‌্যাগিংয়ের জন্য সুস্পষ্টভাবে শাস্তির নীতিমালা প্রণয়ন করে একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে অনুমোদন করে বুয়েটের অধ্যাদেশে সংযোজন।

এ বিষয়ে ছাত্রকল্যাণ পরিচালক বলেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই নীতিমালার খসড়া প্রকাশ করা হবে।

এদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অন্যতম মুখপাত্র ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মাহমুদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, রোববার সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের পরবর্তী অবস্থান জানাবেন তারা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here