কন্ঠশিল্পী চিত্রা তার মায়ের সাথে

 

স্টাফ রিপোর্টার :: আজ মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার, বিশ্ব মা দিবস। পৃথিবীর সবচেয়ে দৃঢ় সম্পর্কের নাম ‘মা’। সবচেয়ে পবিত্র ও মধুর শব্দের নাম ‘মা’। যদিও মাকে ভালোবাসা-শ্রদ্ধা জানানোর কোন দিনক্ষণ ঠিক করে হয় না- তবুও মাকে গভীর মমতায় স্মরণ করার দিন আজ।

মায়ের প্রতি ভালোবাসার কথা লিখে কিংবা বলে বোঝানো যদিও কষ্টকর তবুও আপ্রাণ চেষ্টা যতটুকু মাকে ভালোবাসা যায়। শিশুকালে মা সন্তানের চোখের আড়াল হলেই, কেঁদে বুক ভাসায় শিশু। তখন মা সহজেই বুঝে নেন, ‘মাকে ছাড়া সন্তানের করুণ অবস্থা’। কিন্তু সন্তানরা বড় হলে লেখাপড়া কিংবা কাজের তাগিদে দূরে চলে যায়। মা তখন একলা বাড়িতে থাকেন আর সন্তানের আগমনের দিনগুনেন। মা তখন চাইলেও তার বুকের ধনকে কাছে রাখতে পারে না। মা সে কষ্টের কথা মুখ ফুটে কখনো বলেনও না; সন্তান যদি কষ্ট পায় সে কথা ভেবে।

সময়ের ব্যবধানে দূরন্ত কৈশোরের মতো মাকে হয়তো আর ক্ষণে ক্ষণে জড়িয়ে ধরা হয় না। মা হয়তো ভাবেন… ‘সন্তান বড় হয়েছে, মায়ের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে’। মায়ের বুকটা হাহাকার করে। সন্তানকে একটু জড়িয়ে ধরতে। মায়ের সেই আবেগী প্রত্যাশা আজ একবার পূরণ করুন। সব শঙ্কা ঝেড়ে ফেলে মাকে জড়িয়ে ধরে বলুন- ‘মাগো তোমাকে ভালোবসি সবচেয়ে বেশি।’

জীবনের চরম সংকটকালে পরম সান্ত্বনার স্থল হিসেবে যার কথা প্রথম মনে পড়ে তিনি মমতাময়ী মা। মা প্রথম পৃথিবীর রং-রূপ-শব্দ-গন্ধ-চেনান-দেখান-শেখান। ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে ‘মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশ্ত।’ যুগে যুগে কবি-সাহিত্যিকগণ মা বন্দনা করে কত ভালোবাসাই না ঝরিয়েছেন। আব্রাহাম লিংকন মাকে স্মরণে এনে বলেছিলেন, ‘আমি যা কিছু পেয়েছি, যা কিছু হয়েছি, অথবা যা হতে আশাকরি তার জন্য আমি আমার মার কাছে ঋণী’। ইংরেজ কবি রবার্ট ব্রাউনিং বলেছেন, ‘মাতৃত্বেই সকল মায়া-মমতা ও ভালবাসার শুরু এবং শেষ।’

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো আজ বাংলাদেশেও দিবসটি নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে পালন করা হবে। মা দিবস প্রথম উদযাপিত হয় গ্রিস ও রোমে। প্রাচীন গ্রিকরা তাদের দেবতা গ্রিককের মা রিয়ার সম্মানে উদযাপন করতো বসন্ত উত্সব। ১৬ শতকে যুক্তরাজ্যে ‘মাদারিং সানেড’ নামে একটি দিবস পালিত হতো; যুক্তরাষ্ট্রে এ দিবসটি প্রচলন হয় শান্তিকামী জুলিয়া ওয়ার্ড হোর উদ্যোগে ১৮৭২ সালে। এরই ধারাবাহিকতায় মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর স্বীকৃতি ও প্রসার ঘটে ১৯১৪ সাল থেকে।

বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন অব দি রুরাল পুয়র’-ডরপ মনে করে, দারিদ্র্য দূরীকরণে পিছিয়ে থাকা দেশ হিসেবে আমাদের দেশে মা দিবস পালনের যৌক্তিকতা অনেক। মা দিবসে সভা, সমাবেশ, সেমিনারের মাধ্যমে মায়েদেরকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু আমরা কখনো ভাবি না আমাদের দেশের দরিদ্র মায়েদের অবস্থানের কথা। আমাদের দেশের দরিদ্র মায়েদের কথা চিন্তা করে ২০০৫ সালের বিশ্ব মা দিবস থেকে বেসরকারি সংস্থা ডরপ-এর প্রতিষ্ঠাতা এএইচএম নোমান দেশে দরিদ্র মায়েদের জন্য ‘মাতৃত্বকালীন ভাতা’ প্রদান কার্যক্রম প্রবর্তন করেন। পাশাপাশি তিনি মাতৃত্বকালীন ভাতা সরকারিভাবে চালু করার দাবি করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০০৭-০৮ অর্থবছরে সরকার মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদানের উদ্দোগটি জাতীয় বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করে। যা এখনও চলমান রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here