বিশ্বের প্রথম ভাসমান শহর নিউজ ডেস্ক :: বিশ্বে প্রথম এবং সবচেয়ে বড় ভাসমান শহর বানানোর ঘোষণা করল যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডাভিত্তিক একটি কম্পানি। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফ্রিডম শিপ’। আয়তনে ব্রিটেনের কুইন মেরি টু জাহাজের চারগুণ। এই ভাসমান শহরে স্থায়ীভাবে বাস করবে ৪০ হাজার বাসিন্দা। এতে থাকবে হাসপাতাল, স্কুল, দোকান, পার্ক, এমনকি ছোট একটি বিমানবন্দরসহ সব ধরনের নাগরিক সুবিধা।

২৫ তলাবিশিষ্ট বিশাল এই জাহাজটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার কোটি ডলার। ২৭ লাখ টন ওজনের জাহাজটি সমুদ্রে এক জায়গায় স্থির কোনো শহর হবে না। প্রতি দুই বছরে একবার পৃথিবী প্রদক্ষিণ করবে, নোঙর করবে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ বড় শহরগুলোয়। এতে যেমন এর বাসিন্দাদের পৃথিবী ঘুরে দেখার সুযোগ হবে তেমনি কাটবে সি সিকনেসও। তবে আকৃতির বিশালত্বের কারণে এই শহর-জাহাজ কোনো বন্দরে ঢুকতে পারবে না। তাকে থাকতে হবে বহির্নোঙরে।

ভাসমান শহরটিতে ২০ হাজার ক্রু ছাড়াও স্থায়ী বাসিন্দা থাকবে ৪০ হাজার। তবে বাইরে থেকে প্রতিদিন বাড়তি ৩০ হাজার দর্শনার্থীর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। তা ছাড়া ১০ হাজার অতিথির জন্য রাতযাপনেরও ব্যবস্থা রাখা হবে।

ফ্রিডম শিপ ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক ও ভাইস প্রেসিডেন্ট রজার গুচ জানান, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট কেটে যাওয়ায় তাদের সমুদ্রে ভাসমান শহরের প্রকল্প আবার আলোর মুখ দেখছে। তিনি বলেন, ‘ফ্রিডম শিপ হবে এ পর্যন্ত নির্মিত সবচেয়ে বড় জাহাজ এবং বিশ্বের প্রথম ভাসমান শহর। গত ছয় মাসে আমরা এই প্রকল্পের ব্যাপারে অনেকখানি এগিয়েছি। আশা করছি, এর নির্মাণকাজ শুরুর জন্য ১০০ কোটি ডলার সংগ্রহ করতে পারব।’

ভাসমান শহর যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল থেকে জুন মাসে যাত্রা শুরু করে ইউরোপের উদ্দেশে আটলান্টিক পাড়ি দেবে। ইউরোপে তখন থাকবে গ্রীষ্মকাল। এরপর স্কটল্যান্ড, স্ক্যান্ডিনেভিয়া, এরপর ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে জিব্রাল্টার হয়ে ভূমধ্যসাগরে পড়বে। বড়দিনের সময়টায় তারা থাকবে আফ্রিকার উত্তর উপকূলে।

জানুয়ারিতে যাবে উত্তমাশা অন্তরীপ। সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়া, এরপর এশিয়া হয়ে প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে পৌঁছবে সেপ্টেম্বরে। পরের বছর এটা ঘুরবে পুরো আমেরিকা ও লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে। জাহাজটির প্রতি দুই বছরের যাত্রার ৭০ ভাগ সময় অবশ্য নোঙর করা অবস্থায়ই কাটবে। বাকি ৩০ ভাগ সময় ব্যয় হবে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার জন্য।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here