ডেস্ক রিপোর্ট:: নিরাপদ ও সহজ অভিবাসনের জন্য অভিবাসী শ্রমিকদের ন্যায্য নিয়োগ নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।

সোমবার (১৩ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘টেকশই উন্নয়নে নিরাপদ অভিবাসন- আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তারা। ‘ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন, আইটিইউসি-বিসি’ এ আয়োজন করে।

আইটিইউসি-বিসির চেয়ারপার্সন অধ্যাপক তোফাজ্জল হোসেন বাগুর সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের অভিবাসন কমিটির সদস্য সচিব মো. শহীদুল্লাহ বাদলের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন আইটিইউসি-বিসির অভিবাসন কমিটির সদস্য নাসরিন আক্তার ডিনা, সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইটিইউসি-বিসির মাইগ্রেন্ট রিক্রুটমেন্ট অ্যাডভাইজর (এমআরএ) প্রকল্পের জাতীয় সমন্বয়কারী ও বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সাকিল আখতার চৌধুরী।

বক্তারা বলেন, অভিবাসী শ্রমিক রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও’র মতে, ২০২২ সালে বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা ছিল প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ, যার মধ্যে ১০ লাখ নারী শ্রমিক। অভিবাসী শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম উৎস দেশ। এই অভিবাসী শ্রমিকরা রেমিট্যান্স পাঠানোর মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আমের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ।

তারা আরো বলেন, অধিকাংশ বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং অন্যান্য অঞ্চলে দক্ষ বা অদক্ষ হিসেবে চাকরিতে নিযুক্ত হন। তাদের মধ্যে অনেকেই নির্মাণকাজ, গার্হস্থ্য পরিষেবা, কৃষিকাজ, পরিবহন, স্বাস্থ্য পরিষেবা, উৎপাদনসহ বিভিন্ন খাতে কাজ করেন। এসব বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকরা বিভিন্ন সময়ে শ্রমিক নির্যাতন, দুর্ব্যবহার, জোরপূর্বক শ্রম, কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য ও হয়রানির শিকার হয়। একই সঙ্গে অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা ও অনিয়মিত মজুরি প্রদানের অভিযোগও পাওয়া যায়। এছাড়াও অনেক বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিক বিভিন্ন সাব-এজেন্ট বা দালানের মাধ্যমে অভিবাসন করে। এক্ষেত্রে তারা মানব পাচার, বাড়তি খরচসহ ঋণের বোঝা বৃদ্ধির মতো ঝুঁকিতে পড়ে এবং তারা জোরপূর্বক শ্রম প্রদানে বাধ্য হয়।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, রেমিট্যান্স জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সরকার অভিবাসীদের বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে এই পদক্ষেপ আরো বাড়াতে হবে।

টেকসই উন্নয়নের জন্য নিরাপদ ও সহজ অভিবাসন নিশ্চিতের যে উপায় রয়েছে সেগুলো হলো-

১. অভিবাসনের ক্ষেত্রে আইনি পথ নিশ্চিত করা।

২. মানবাধিকার সুরক্ষা প্রদান করা।

৩. অভিবাসনের মূল কারণগুলোকে চিহ্নিত করা।

৪. নিরাপদ অভিবাসনের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here