ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ১৩ নং উমেদপুর ইউনিয়নের বিরান ভূমিখ্যাত আড়-য়াকান্দি গ্রামে প্রায় ৬০ বিঘা জমির পাতা আমন ধান কাটা নিয়ে দেখা দিয়েছে বড়ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা। এই আশঙ্কা ক্রমেই বৃদ্ধি পটাচ্ছে।এ নিয়ে রাজনৈতিক জটিলতা , টুলু হত্যা মামলার সাথে নতুন আসামীর অন্তর্ভুক্তি ও গ্রাম ছাড়া মানুষের মধ্যে বিবাদ ক্রমেই বাড়ছে, কিন্ত কমছেনা।

গ্রামর চর্তুদিকে দোলখাওয়ানো সোনালী ধানের মাঠ , নবান্নের উৎসবে অংশ নিতে মরিয়া হলেও গ্রামের টুলু হত্যা মামসলার তার বাধ সেজেছে।

এখন প্রশ্ন এর নেপথ্যে দখল না চাঁদাবাজি ? এই প্রশ্নই এখন ঘুর পাক খাচ্ছে এলাকার মানুষের কাছে। বেশ কিছুদিন ধরেই চলছে জল্পনা কল্পনা, থেমে নেই সংঘর্ষের আশঙ্কা।

তবে কি প্রশাসনের নিরব ভূমিকা আড়-য়াকান্দি গ্রামে নতুণ মোড় নিচ্ছে ? না চাঁদা বাজ, দখলবাজদের দৌরাত্ন থামিয়ে টুলু হত্যা মামলার জট নিরসন করে গ্রামে পু:ন বসতি স্থাপনে সবাই এগিয়ে আসবে এ গল্পই উমেদপুর গ্রুামের বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে।

এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) আহসান হাবিব জানান, আড়ুয়াকান্দি গ্রামে টুলু হত্যা মামলার চার্জশীট তৈরির কাজ চলছে ,শিঘ্রয় শেষ হবে এবং গ্রামে অরাজকতা সৃষ্টির পায়তারা বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরজমিনে ঘুরে এবং পুলিশ সুত্রে জানা যায়, এ বছরের ১১ মে  আড়-য়াকান্দি গ্রামে টুলু হত্যাকে কেন্দ করে কয়েক গ্রাম নিয়ে ৩৩ জনকে আসামী করে শৈলকুপা থনায় শৈলজিআর ১১০/১১ নং মামলা করা হয়।

রাতের আধারে সন্ত্রাসী হামলায় টুলু হত্যাকে কেন্দ্র করে গ্রামের মোকাদ্দেস মেম্বর নানাবিধ ফায়দা লুটতে মরিয়া হয়ে ওঠে। সে রাতেই তার নেতৃত্বে  সন্ত্রাসী বাহিনী লুট করে গ্রামের ৪৮ টি বাড়ির সকল সম্পদ, নষ্ট করে লক্ষ লক্ষ টাকার গাছপালা, ইট পাথর , র্‌ড সিমেন্ট, ঘরে থাকা ফসলাদি, আসবাবপত্রসহ ঘরে থাকা নানাবিধ মুল্যবান জিনিস পত্র।

এনিয়ে লুটের মামলা ঠেকে গ্রা‌ম ছাড়া হয় নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ, শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৩৬০ জন মানুষ। এরা পাশ্ববর্তী গ্রামের আত্নীয়স্বজনদের বাড়িতে থেকে নিজ নিজ জমিতে আমন ধান রোপন করাই তাদের জন্য এখন কাল হয়ে দাড়িয়েছে। বিপদের ঘনঘটারমধ্যে মোকাদ্দেস বাহিনীকে চাঁদা দিয়ে কেউ কেউ গ্রামে এসে ধান রোপন করলেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় পড়ে তাদের ধান কাটতে দিচ্ছেনন না বলে সরকারের বিভিন্ন মহলে অভিযোগ পড়েছে।

আড়-য়াকান্দি গ্রামের আশরাফ আলী জানান, মোকাদ্দেসকে টাকা দিয়ে পাশ্ববর্তী গ্রাম থেকে আমন ধান রোপন ওপরিচর্যা করে তুলেছেন।  এখন সে ধান কাটতে নতুন করে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে। আর চাঁদা না দিলে সেই ধান কাটতে দেওয়া হবেনা বলা হচ্ছে। একই অভিযোগ করেছেন গ্রামের আকামত, মজিদ , ইউনুস।

গ্রামের লুতফর খা জানান, তিনি ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে ২২ বিঘা জমিতে ধান রোপন করলেও এখন নতুন করে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে। না হলে মোকাদ্দেস মেম্বর ধান কাটতে দিচ্ছেনা। তিনি আরোও বলেন মামলার চার্জশীট বের নাহওয়ার সুযোগে ধান কাটতে গেলে নতুন আসামীর অন-র্ভুক্তির ভয় দেখিয়ে যাচ্ছে মোকাদ্দেস বাহিনীর লোকজন। এ বাহিনীর নাম, ঠিকানা সম্বলিত একটি অভিযোগও বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে পৌচেছে।

শৈলকুপা থানা সুত্র জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে মোকদ্দেস মেম্বরকে থানায় তলব করা হয়েছিল এবং তাকে ধান কাটতে নিষেধ করলেও গ্রামে ফিরে কাচাঁপাকা মিলিয়ে প্রায় ৬০ বিঘা জমির ধান রাতের আধারে কেটে নিয়ে যাবার পায়তারা চালাচ্ছে।এ নিয়ে আড়ুয়াকান্দি গ্রামে নতুন করে দু’গ্রুপের মধ্যে আবার নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে এবং যেকোন সময় আবার ঘটতে পারে ভয়াবহ সংঘর্ষ, বিরানভূমি আড়ুয়াকান্দি গ্রামে ছড়িয়ে পড়তে পারে লুটপাট, হামলা, মামলা।

তবে মেম্বর মোকাদ্দেস আলী পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, প্রতিপক্ষরা ৬০ বিঘা জমির কথা বললেও তাদের মাঠে ৬০ বিঘা জমি নেই এবং তারা তাদের জমিতে ধান লাগায়নি। তিনি বলেন, গ্রামের দিন মজুরেরা পড়ে থাকা জমি চাষ করেছে মাত্র। এই ধান আসামী পক্ষের নিতে হলে ৪ ভাগের ৩ ভাগ দেওয়া যেতে পারে।

তার লালিত বাহিনীর হরেক রকম লুটপাট, চাঁদাবাজির কথা অস্বীকার করে বলেন, আসামীরা তাদের বাড়ি থেকে তাদের বাড়ি থেকে ঘরের টিন, আসবাবপত্র, বাড়িঘর ভেঙ্গে অন্য গ্রামে রেখে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কবলে পড়ে প্রতিপক্ষরা গ্রাম ছাড়া হলেও সব দোষ তার ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্ট চলানো হচ্ছে।

এ ব্যপারে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, টুলু হত্যাকে কেন্দ্র করে আড়-য়াকান্দি গ্রামে আর কোন ধরনের অরাজকতা বরদাস্ত করা হবেনা। সকল বিষয়ে কঠোর ভাবে ব্যবস-া গ্রহন করা হবে। এই প্রায় ৬০ বিঘা জমির ধান কাটার বিষয়ে যাতে নতুন করে সহিংসতা বৃদ্ধি না পায় তার তার জন্য সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও তিনি যানান।
এলাকাবাসীর দাবি এই আড়-য়াকান্দি গ্রামে  দীর্ঘ দিনের বিরাজমান দ্বন্দ যেন অতি শিঘ্রই নিরসন হয়।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/শাহারিয়ার রহমান রকি/ঝিনাইদহ

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here