বাহরাইনে এ বছরের শুরুর দিকে গণতন্ত্র-পন্থী বিক্ষোভকারীদের দমনে সেনাবাহিনী অযৌক্তিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বাহরাইন একটি শিয়া অধ্যুষিত দেশ এবং সেখানে বর্তমান শাসক সুন্নি রাজপরিবার।
রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ থেকেই গত ফেব্রুয়ারিতে এই বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়।
বাহরাইনের বাদশা শেখ হামাদ বিন ইসা আল খলিফা এবং তার সরকারের জন্য এই প্রতিবেদন খুবই অস্বস্তিকর একটি ব্যাপার হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
তদন্ত কমিশন পাঁচ হাজার লোকের সাথে কথা বলে বিভিন্ন সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে জানায়, বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর বহু লোককে বিনা কারণে আটক করে কর্তৃপক্ষ।
অনেকের ওপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে।
এতে বলা হয়, আটকের পর চোখ বেঁধে, পিটিয়ে এবং ধর্ষণের হুমকি দিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়।
বিক্ষোভে ইরানের ইন্ধন দেয়ার যে অভিযোগের কোনো সত্যতাও পাওয়া যায়নি, বলছে কমিশন।
তদন্ত কমিশনের প্রধান প্রফেসর শরিফ বাসিওনি রাজপ্রাসাদে হাজার-খানেক দর্শকসহ বাদশার সামনে এ প্রতিবেদনটি পাঠ করে শোনান।
বাদশা হামাদ প্রতিবেদনে পাওয়া তথ্যপ্রমাণকে সতর্ক সংকেত হিসেবে উল্লেখ করে এটিকে স্বাগত জানিয়েছেন।
বাদশা বলেন, এধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেজন্য সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।
বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, সংস্কার ও দোষীদের বিচারে যে প্রতিশ্রুতি বাদশা দিয়েছেন তা তিনি রক্ষা করতে পারলে দেশে ইতিবাচক প্রভাব রাখবে।
তা নাহলে সেখানে আরও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে বাহরাইনের প্রধান বিরোধী দল আল ওয়েফাকের নেতা আলী আল আসাদ বলছেন, শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।
এদিকে, তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার পর রাজপ্রাসাদ থেকে কিছু দূরে একটি শিয়া অধ্যুষিত এলাকায় শিয়ারা টায়ার জ্বালিয়ে বাদশার পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করে।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/আন্তর্জাতিক ডেস্ক