প্রকৃতির রূপ লাবন্য মনোমগ্ধকর ছোট বড় অসংখ্য সবুজ পাহাড়ে ঘেরা বকশীগঞ্জের গারো পাহাড়। প্রকৃতির উজার করা সৌন্দর্যে উদ্ভাসিত ভারতের মেঘালয় সীমান্তঘেঁষা এ পাহাড়ি জনপদ আনন্দ জুড়িয়ে দেয় প্রকৃতি প্রেমিক মানুষের মন। এ পাহাড়ের ২৬ একর বনভূমি জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে লাউচাপড়ার ক্ষনিকা পিকনিক স্পর্ট। অপার সম্ভাবনাময় এ পর্যটন কেন্দ্রটিকে ঘিরে বিনোদন পিয়াসী মানুষের প্রবল আর্কষণ থাকলেও প্রতিবেশী শেরপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের অবহেলার কারনে দীর্ঘ সোয়া যুগ পরও এর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়নি। ফলে সম্ভাবনাময় এ পর্যটন কেন্দ্রটি প্রাতিষ্টানিক ভিক্তিতে গড়ে উঠছেনা।
জামালপুর জেলা থেকে ৫৫ কিলোমিটার এবং বকশীগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তরে ভারতের তুরা পাহাড়ের পাদদেশে সরকারি প্রায় ১০ হাজার একর জায়গা জুড়ে গারো পাহাড়। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের পাহাড়ি এ বনভূমিতে জামালপুর জেলা পরিষদ ৯৬ সালে ২৬ একর জায়গা জুড়ে গারো পাহাড়ের চূড়ায় নির্মাণ করেছে ক্ষনিকা নামের পিকনিক স্পটটি। জেলার একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র। বকশীগঞ্জের কামালপুর মিদ্যাপাড়া মোড় থেকে লাউচাপড়া পর্যটন কেন্দ্র পর্যনত্ম ৬ কিলোমিটার পাহাড়ি সড়কটি প্রতিবেশী শেরপুর জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতাধীন। এক যুগ আগে রাসত্মাটি নিমার্ণ হলেও ছোট দুইটি ব্রিজ ও সড়কটি পনুঃ নিমার্নের অভাবে দীর্ঘ ৩৫ কিলোমিটার রাসত্মা ঘুরে লাউচাপড়া পর্যটন কেন্দ্রে আসতে হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ শেরপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের অবহেলার কারনে রাস্তাটি পুনঃ সংস্কার না করায় এক যুগেও লাভজনক এ বিনোদন কেন্দ্রের কোন উন্নয়ন ঘটেনি। এই গারো পাহাড়ে এসে দেখা যাবে হাজারো প্রশানিত্মর বৃক্ষরাজি পাখিদের কোলাহল ঝরনার কলতানে মুখরিত এ স্পটে মাটি থেকে ১৬শ”ফুট উচুঁ পাহাড়ের চূড়ায় নির্মাণ করা হয়েছে ৬০ ফুট সুরম্য পর্যবেক্ষণ টাওয়ার টুরিস্ট কমপেস্টসহ নানা স্থাপনা। টাওয়ারে দাড়িয়ে চারদিকে তাকালে চোখ পড়ে শুধু পাহাড়ের দূরের ও কাছের আকাশ ছোয়াঁ উচুঁ উচুঁ চূড়া। এ যেন সবুজ গালিচার মোড়া প্রকৃতি। এসব পাহাড়ের নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে স্বচ্ছ পানির ঝর্ণার ধারা। শোনা যায় অসংখ্য পাখির কলকাকলি। কোথাও গহীন জঙ্গল আবার কোথাও দেখা যায় বৃক্ষহীন ন্যাড়া পাহাড়। আরও দেখা যায় ওপাড়ে সীমানা পেরিয়ে ভারতের মেঘালয়ের অসংখ্য পাহাড়। ভারত সীমান্ত পাহাড়ের কূলে সূর্যোদয় ও সূর্যাসেত্মর অপূর্ব দর্শন। এছাড়া পায়ে হেটে চারদিকে ঘুরে পাহাড়ের উচুঁ নিচু ও আঁকা বাঁকা পথ চলতে চলতে দেখা যাবে সৌন্দর্যে মাখা বিসত্মৃত অঞ্চল। এসব দৃশ্যাবলী দেখে মনে হবে কোন নিপুন চিত্রকর তার রঙের ভান্ডার উজাড় করে পরম যত্নে অংকন করেছেন মনোলোভা আলপনা। পাহাড়ের বিরাট এলাকা জুড়ে রয়েছে আকাশমনি বেলজিয়াম ইউক্যালিপটাস উডলট কড়ইবৃক্ষ ছাড়াও চেনা অচেনা নানা জাতের লতাগুল্ম আর বাহারি গাছ গাছালির সৌন্দর্য মন্ডিত সবুজের সমারোহ। লাউচাপড়া , সাতানিপাড়া , দিঘলাকোনা , গারোপাড়া, বালিজোড়া, মেঘাদল শোখনাথপাড়া প্রভূতি গ্রামের গহীন গারো পাহাড়ের চূড়ায় কিংবা পাশের কুল ঘেষেঁ সবুজের আড়ালে খড়ের অথবা মাটির ঘরে বসবাসরত গারো কোচদের চোখে পড়বে। আর এরই টানে অসংখ্য পর্যটক শীতের কুহেলিকা আর গানের টানে এখানে এসে ভিড় জমায় প্রতিবছর। তাই শীত মৌসুমের প্রতিদিন অসংখ্য অতিথিদের পদভারে সেই নির্ভত অঞ্চলটিও হয়ে ওঠে উৎসবমুখর। অনুন্নত সড়ক যোগাযোগের কারনে বিকশিত হচ্ছে না সাগরে মত গারো পাহাড়ের বিশালময় এ পিকনিক স্পটটি।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/সরওয়ার জামান রতন/বকসীগঞ্জ