গণধর্ষণ
সাজিদ হাসান, বান্দরবান প্রতিনিধি:: বান্দরবানের লামা উপজেলায় এবার মদ খাইয়ে অন্তঃসত্ত্বা এক স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের অভিযোগে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার সময় নূর হোসেন নামের একজনকে আটক করছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে জেলার লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের অংহারি পাড়ার শ্বশান (কবরস্থান) সংলগ্ন তামাক খেতে গণ ধর্ষণের এই ঘটনা ঘটে। বৈশাখী মেলায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে স্থানীয় নুর হোসেন ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল যোগে এই নারীকে অংহারীপাড়ায় নিয়ে যায়। সেখানে জনৈক থোয়াই সাছিং মারমার ঘরে বসে উভয়ে দেশীয় তৈরি চোলাই মদ পান করেন। এরপর বদুঝিরি এলাকার নূর হোসেন, বড় ছনখোলা এলাকার নূর মোহাম্মদ ও কুমারী এলাকার মো. রুবেলসহ ৪-৫জন জোর করে মদ খাইয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেন।
আরো জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে পাশের এলাকার লোকজন এই নারীকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে নিয়ে আসার সময় ইউপি সদস্য মো. কামাল উদ্দিন ও তাঁর ছেলে কাফি উদ্দিন ওই নারীকে বিচারের নামে মারধর করেন। এই নারী শারীরিক ভাবে অসুস্থ হলেও তাকে ঘটনার পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়নি।
আরো জানা গেছে, বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ধর্ষকদের পক্ষ অবলম্বন করে তিন জন জনপ্রতিনিধি ইউনিয়নের ৮ং ইউপি সদস্য মো. সহিদুজ্জামান, ৭ নং ওয়ার্ডের কামাল উদ্দিন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য আনাই মারমা তাঁকে ইয়াংছা বাজারে নিয়ে প্রকাশ্যে বিচার বসা। ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই নারীকে কিছুদিন আগে তাঁর স্বামী ছেড়ে চলে যান। ওই নারী এখন ছয় বছর বয়সী এক ছেলে সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকেন।
এই ব্যাপারে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৮ং ইউপি সদস্য মো.সহিদুজ্জামান পাহাড়বার্তাকে বলেন, আমরা ঘটনার পর কোন বিচার করিনি, মেয়েটিকে তার মায়ের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি, পরে শুনলাম তাকে রাতে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে।
ওই নারী বলেন, মেম্বাররা কোনো অভিযোগ না শুনে সাদা কাগজে টিপসই নিয়ে বলেন, যা হয়েছে এখানেই শেষ, কোনো অভিযোগ করবে না। তাঁরা নূর হোসেন, নূর মোহাম্মদ ও রুবেলকে বাড়ি চলে যেতে বলেন। পরে আমি মায়ের কাছে চলে যায়।
এই ব্যাপারে মারধরের ও বিচারের ঘটনায় অভিযুক্ত ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের কামাল উদ্দিনের সাথে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে ধর্ষণের শিকার নারীর মা তাঁর মেয়ের ধর্ষণের ঘটনার বিচার দাবি করেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভিকটিম ও অভিযুক্ত নুর হোসেন থানা হেফাজতে রয়েছেন। এই ঘটনায় জেলার লামা জুঁড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে লামা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, ভিকটিম ধর্ষণের বিষয়টি অস্বীকারের পাশাপাশি মামলা করতে চাচ্ছেনা। তবে ভিকটিম ও অভিযুক্ত নুর হোসেনকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। ভিকটিম অভিযোগ করার সাথে সাথে মামলা নেয়া হবে
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here