মোঃ শহিদুল ইসলাম, বাগেরহাট প্রতিনিধি :: নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাগেরহাটে রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের ১২১তম জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। দিনটি উপলক্ষে বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজের আয়োজনে কবির লেখা বই, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে কলেজ চত্বরে এসব অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুজ্জামান টুকু। এর আগে অতিথিদের উত্তরিও পড়িয়ে দেন আয়োজকরা। পরে সরকারি পিসি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ শাখিলুর রহমানের সভাপতিত্বে কবির জীবন ও কর্ম নিয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদ।
এসময় আরও বক্তব্য দেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বাগেরহাটের উপ-পরিচালক দেব প্রসাদ পাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ শাহিনুজ্জামান, পিসি কলেজের উপাধ্যক্ষ্য মোস্তাহিদুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিল্লুর রহমান, বাগেরহাট ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আহাদ উদ্দিন হায়দার, সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিজিয়া পারভীণ, শিক্ষাবিদ মোজাফফর হোসেন, কমল কুমার ঘোষ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, জীবনানন্দ দাশের প্রগাঢ় দেশাত্ববোধ আর প্রকৃতি চেতা মহান মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে হয়ে উঠেছিল অন্যতম সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গ। তার কবি মানস আমাদের চেতনাকে আরও সানিত করে। সকল সম্ভাবনাকে পথ দেখায়। নতুন আলোয় উদ্ভাসিত করে। মুজিববর্ষকে সামনে রেখে আগামী প্রজন্মকে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য আর মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে কবি জীবনানন্দ দাসের বই পড়ার আহবান জানান বক্তারা।
১৮৯৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বরিশালে সত্যানন্দ দাস ও কুশুম কুমারী দাসের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন জীবনানন্দ দাস। তার ডাকনাম ছিল মিলু। তিনি বরিশালে ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের প্রাথমিক পর্যায়ে অংশগ্রহণ করেন এবং তার মানবহিতৈষী কাজের জন্যে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হন। ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে ব্রজমোহন বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকিউলেশন এবং ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। পরে ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্স সহ বিএ ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে দ্বিতীয় শ্রেণীতে এম. এ. ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে জীবনানন্দ কলকাতার সিটি কলেজে টিউটর হিসেবে অধ্যাপনা শুরু করেন। ১৯২৯ সালে বাগেরহাটের পিসি কলেজেও কিছু দিন অধ্যাপনা করেন এই জনপ্রিয় কবি। ১৯৫৪ সালের ২২শে অক্টোবর রাতে কলকাতার শম্ভুনাথ পতি হাসপাতালে তিনি পরলোকগমন করেন।
বেলা অবেলা কালবেলা, রূপসী বাংলা, ধূসর পান্ডুলিপি, বনলতা সেন, মহাপৃথিবীসহ অেনক কাব্যগ্রন্থ রয়েছে তার। কাব্যগ্রন্থছাড়াও তিনি গল্পগ্রন্থ, উপন্যাস ও প্রবন্ধ লিখেছেন।