রাজু দে, স্টাফ রিপোর্টার, নাটোর ::
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় জনবল সংকটে ২০ বছরের অধিক সময় থেকে বিএডিসি গোডাউনটি বন্ধ পড়ে আছে। জমিতে অন্যরা তৈরি করছেন স্থাপনা। দিনে-দিনে চুরি হয়ে যাচ্ছে অবকাঠামো।স্থানীয়রা জানায়, উপজেলা চত্বরে বিএডিসির ওই সাব সেন্টার থেকে একসময় ডিলার ও কৃষকরা বীজ কিনতে পারতো। কিন্তু প্রায় ২০০২ সাল থেকে গোডাউনটি বন্ধ রয়েছে। ফলে নাটোর জেলা বিএডিসি গোডাউন থেকে ডিলাররা বীজ কিনে নিয়ে আসেন। কৃষকরা ডিলারদের নিকট থেকে সেই বীজ কিনে থাকেন। এতে কৃষকরা যেমন ন্যায্যমূল্য থেকে হচ্ছেন বঞ্চিত, তেমনি অনেক সময় প্রতারণার শিকারও হচ্ছেন। আবার গোডাউটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকাতে কর্মচারীদের থাকার আবাসিক ভবনের দরজা-জানালা গুলো চুরি হয়ে গেছে। এবং জমিটির পাশের বাড়ির মালিকরা আস্তে-আস্তে জমিটির কিছু অংশ দখলে নিয়ে নিয়েছে।
উপজেলা পরিষদ চত্বরে ভবনের সামনে প্রায় ৩৫ বছর ধরে মুদির দোকান পরিচালনাকারী সিরাজুল ইসলাম  বাবলু বলেন , বিএডিসির আবাসিক ভবনটি দীর্ঘ দিন ধরে পরিত্যাক্ত হয়ে পড়ে আছে। আবাসিক ভবনের একটি কক্ষে স্থানীয় এক শিক্ষক প্রায় দীর্ঘ কয়েক বছর শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছেন। কিন্তু কক্ষগুলোর দরজা-জানালা  চুরি হওয়ায় গতবছর থেকে সেখানে আর পড়ান না।
স্থানীয় বাসিন্দা সালজার হোসেন রাজু বলেন, তাঁর বাবা দীর্ঘ ১০ বছর ওই গোডাউনের স্টোর ক্রিপার পদে চাকরি করেছেন। সেই টানে বন্ধ হওয়ার পরেও দীর্ঘ ১৫ বছর বিনা পারিশ্রমিকে গোডাউনটির দেখভাল করেছিলেন। বিভিন্ন কারণে এখন আর খোঁজ খবর রাখেন না। উপজেলার বিএডিসি বীজ ও সার এসোসিয়েশনের সভাপতি মালঞ্চি বাজারের মেসার্স মোর এন্ড সন্স এর স্বত্বাধিকারী রাম প্রসাদ মোর বলেন, মূলত জনবল সংকটের কারণেই বিএডিসির ওই সাব সেন্টারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় এবং তদারকি না থাকায় গোডাউনের জমিটিও অন্যরা দখল করে নিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, উপজেলায় প্রায় ২২ জন বিএডিসি ডিলার আছেন। সকলেই নাটোর জেলা সদরের বিএডিসি গোডাউন থেকে বীজ নিয়ে আসেন। ফলে খরচ বেশি হয়। কৃষকদেরও সেই কারণে বেশি দামে বীজ কিনতে হয়। আবার উপজেলায় গোডাউন থাকলে কৃষকেরা সরাসরি সেখান থেকে ন্যায্যমূল্যে বীজ কিনতে পারত।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ভবসিন্ধু রায় বলেন, উপজেলায় বিএডিসির গোডাউন চালু থাকলে সঠিক মূল্যে কৃষকরা বীজ কিনতে পারতো। আবার দ্বার গোড়ায় সরকারি সেবা থাকায় গুনগত মানের বীজ পেতে কৃষকদের আস্থা বাড়তো।
নাটোর বিএডিসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তাঁর নাটোরে যোগদান করা খুব বেশিদিন হয়নি। আসলে কি কারণে গোডাউনটি বন্ধ করা হয়েছে তিনি সেটি জানেন না। তবে তাঁদের দপ্তরে জনবল সংকট রয়েছে। আগামীতে কর্তৃপক্ষ জনবল নিয়োগ করলে চালু করা যেতে পারে।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here