বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) চলতি বছরে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে সীমাহীন স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। মেধাবী প্রার্থী থাকা সত্ত্ব্েও বাকৃবির বিভিন্ন বিভাগের প্রভাবশালী শিক্ষকদের স্বজনপ্রীতির কারণে অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগীরা ছাড়াও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯৮তম সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে বাকৃবির বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া দেয়। ওই সভার সিদ্ধানত্ম অনুযায়ী বাকৃবির মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান কৃষি অনুষদের অনার্সে অষ্টম স্থান অধিকারী মো. শফিকুল ইসলাম। সে বাকৃবির মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাবশালী শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলামের জামাতা। অথচ বাকৃবির একই অনুষদের অনার্র্সে দ্বিতীয় স্থান অধিকারী আহম্মাদ মোস্তফা কামাল শামীম এবং ষষ্ঠ স্থান অধিকারী মনিরা ইয়াসমিন হ্যাপি ওই বিভাগের প্রভাষক হতে পারে নি। আহম্মাদ মোস্তফা কামাল শামীম সমপ্রতি বাকৃবির ৬ষ্ঠ সমাবর্তনে স্বর্ণপদক লাভ করেন।
ওই সিন্ডিকেট সভায় বাকৃবির কৃষি সমপ্রসারণ শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বাকৃবির মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের একোয়াকালচার বিভাগের প্রভাবশালী শিক্ষক প্রফেসর ড. এসএম রহমত উলাহর ছেলে এসএম আশিক উলাহ। বাকৃবির কৃষি অনুষদের অনার্সে তার স্থান চতুর্থ। অথচ কৃষি অনুষদের অনার্সে তৃতীয় স্থান অধিকার করেও কৃষি সমপ্রসারণ শিক্ষা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান নি ইফাত আরা মাহজাবিন মন্টি।
এদিকে একই সিন্ডিকেটে বাকৃবির সীড সায়েন্স ও টেকনোলজি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রভাবশালী শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. ফেরসৌস মন্ডলের ছেলে আতিক উস ছাহিদ। তিনি অনার্সে ১০স্থান অধিকার করেন। অথচ ৭ম স্থান অধিকার করেও প্রভাষক হতে পারেন নি রহিমা বিনতে হক।
এছাড়া একই সিন্ডিকেটে বাকৃবির কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগে সহকারী প্রফেসর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন একই বিভাগের প্রভাবশালী শিক্ষক প্রফেসর ড. একেএম শামসুদ্দীনের মেয়ে ফারহানা শারমিন সুমা এবং ইনষ্টিটিউট অব এগ্রিবিজনেজ ম্যানেজমেন্টে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপুষ্টি বিভাগের প্রভাবশালী শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. জসিম উদ্দিন খানের ছেলে শাহরিয়ার জামিল খান। তুলনামূলকভাবে ভাল ফলাফল থাকা সত্ত্বেও কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগে সহকারী প্রফেসর হিসেবে নিয়োগ পান নি শাহ মো. নাইমূল ইসলাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের কয়েকজন জানান, অনার্সে তুলনামূলকভাবে ভাল ফলাফল থাকা সত্ত্বেও স্বজনপ্রীতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন থেকে বঞ্চিত হলাম। তারা এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদনত্ম দাবি করেন।
এ বিষয়ে বাকৃবির রেজিস্ট্রার এবং সিন্ডিকেটের সচিব মো. নজিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যসত্ম আছেন এবং এখন কথা বলতে পারবেন না বলে জানান।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/অমিত মালাকার/বাকৃবি