বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি)  বুধবার বিকেল ৪টার দিকে ছাত্র ইউনিয়ন সংসদের অফিসে ঢুকে ছাত্র ইউনিয়ন নেতাদের উপর হামলা করেছে বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা। ছাত্র ইউনিয়নের কার্যালয়ে উপস্থিত ইউনিয়নের সভাপতি, সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ আরো ৬ জনকে বেধড়ক পিটিয়ে মাথা, হাত, পা ভেঙ্গে দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হলে নতুনদের মধ্যে সিটবণ্টন ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাজমুল আহসান হলে নতুন ভর্তিকৃত নবীন এক শিক্ষার্থীকে সিট দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত সোমবার সন্ধ্যায় ওই হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে ছাত্র ইউনিয়নের বেশ কিছু নেতাকর্মীর মধ্যে বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে। এর এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের উপর চড়াও হলে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার রাত ১২ টার দিকে ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা  ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপর চড়াও হলে সংঘর্ষ বাঁধে। এক পর্যায়ে ৮-১০জন ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীকে পিটিয়ে হল থেকে বের করে দেয় ছাত্রলীগের কর্মীরা । এসময় ছাত্রলীগের নাঈম সামান্য আহত হন। এদিকে পূর্বের দুইদিনের ঘটনা মিমাংসা করার জন্য গতকাল দুপুর ১টার দিকে ছাত্র ইউনিয়ন এবং ছাত্রলীগের নেতাদের সাথে নিয়ে প্রক্টর কার্য্যালয়ে আলোচনায় বসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা এবং প্রক্টর। এসময় ছাত্রলীগ ব্যাপারটি মিমাংসা করে আর কোন সমস্যা হবেনা বলে আশ্বাস দেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের। পরে ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জব্বার মোড়ে অবস্থিত অফিসে জরুরী সভায় বসলে বিকাল ৪টার দিকে হঠাৎ করে নাজমুল আহসান হলের  ছাত্রলীর কর্মী জাকারিয়া, নাঈম, সায়েম, আহাদ, সোহান, মামুন, রানাসহ ১০-১২জন কর্মী হকিস্টিক, রড, রামদাসহ লাঠিসোঠা নিয়ে তাদের উপর হটাৎ হামলা চালায়। এসময় সেখানে উপস্থিত ইউনিয়নের কর্মীদের বেধড়ক পেটাতে থাকে। এসময় ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোবাহানের মাথা ফেটে যায় এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম মিয়ার হাত-পা ভেঙ্গে দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলায় অভিজিৎ বসু, বাপ্পী, শ্রীদাম পাল আহত হন। পরে আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ কেয়ার সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। তবে মাথায় মারাত্নক আঘাত পাওয়ায় সোবহানের অবস্থা গুরুত্বর বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রফন্ট।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এম এ সালাম বলেন, ‘ঘটনাটি অনাকাঙ্কিত। জড়িতদের সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। অভিযুক্তদের অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’

এ ব্যাপারে বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সেক্রেটারী রফিকুজ্জামান ইমন বলেন, ‘ আমি ক্যাম্পাসের বাহিরে থাকায় ঘটনার সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত নয়। ছাত্রলীগের কেই জড়িত থাকলে তার বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শামছুদ্দিন আল আজাদ বলেন, ‘ব্যক্তিগত আক্রোশের জন্য ঘটনাটি ঘটেছে যা খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনার সাথে যেই জড়িত থাকুক না কেন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/অমিত মালাকার/বাকৃবি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here