ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম

       আসাদুজ্জামান জুয়েল

আব্দুর রাজ্জাকের জন্ম ২ মে ১৯৪০ সালে তৎকালীন ফরিদপুর বর্তমান শরীয়তপুর জেলার ডামুড্যা উপজেলার দক্ষিন ডামুড্যা গ্রামে। তার পিতার নাম আলহাজ ইমান উদ্দিন। ডামুড্যা মুসলিম পাইলট হাইস্কুল থেকে তিনি ১৯৫৮ সালে মেট্রিক পাশ করেন। এরপর তিনি ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করে রাষ্ট্‌্রবিজ্ঞানে অনার্স সহ এমএ পাশ করেন। পরে তিনি আইন শাস্ত্রে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি নেন। ছাত্র জীবন থেকে রাজ্জাক রাজনীতিতে সক্রিয় অংশ গ্রহন করেন। তিনি ১৯৬৫ থেকে ৬৭ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফজলুল হক হলের সাধারন সম্পাদক ও পাকিস্তান ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত কর্মঠ একজন ছাত্রনেতা। ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশন বিরোধী অন্দোলন, ৬৪ সালে ছাত্র আন্দোলন ও ৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলন, ৬৯ সালের গন আন্দোলনসহ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় এজন সংগঠক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৬৯ থেকে ৭০ সাল পর্যন্ত তিনি আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান ও ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামে মেঘালয় সেক্টরে মুজিব বাহিনীর প্রধান হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর বাকশালের সাধরন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৮ থেকে ৮১ ও ১৯৮১ থেকে ৮৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। পরবর্তীতে ১৯৮৩ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত বাকশালের সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় স্বৈরাচার বিরোধী আন্দেলনে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। ১৯৯৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে ও তিনি আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি ৫ বার কারাবরন করেছেন। তিনি ১৯৭০ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে ডামুড্যা নির্বাচনী এলাকা থেকে, ১৯৭৩ সালে জাতীয় নির্বাচনে মাদারীপুর জেলার কালকিনি এলাকা থেকে এবং ১৯৯১ সালে সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-৩ (ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা ও গোসাইরহাট) ও মাদারীপুর-২ (কালকিনি) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে শরীয়তপুর-১ ও শরীয়তপুর-৩ আসন থেকে এবং ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-৩ ও ফরিদপুর জেলার সদরপুর আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বে থাকা কালীন সময়ে তিনি ঐতিহাসিক পানি চূক্তিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। এ ছাড়াও তিনি শরীয়তপুর জেলায় বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। মাওয়া-কাওড়াকান্দি ফেরী, শরীয়তপুর-চাদপুর ফেরী ও চট্রগ্রাম-শরীয়তপুর-চাদপুর-মাদারীপুর-খুলনা মহাসড়ক চালু করার ব্যাপারে তার বিশেষ অবদান রয়েছে।

তিনি ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইরাক, ইরান, সৌদি আরব, আমিরাত, কাতার ভারত, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরী, জার্মান, অষ্ট্রিয়া, সুইডেন, গ্রীস সহ বহু দেশ সফর করেছেন। তাঁর স্ত্রী ফরিদা রাজ্জাক একজন গৃহিনী। ২ ছেলে সম্য ও ফাহিম রাজ্জাক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here