ফরহাদ খাদেম, ইবি সংবাদদাতা ::

বর্ণাঢ্য আয়জনের মধ্য দিয়ে ৪৬তম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে সোমবার (২৫ নভেম্বর) পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, কেক কাটা, পায়রা ও বেলুন উড়ানো এবং আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল মাঠে পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, কেক কাটা, পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। পরে উপাচার্যের নেতৃত্বে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সকল বিভাগ, হল ও অনুষদগুলো স্ব স্ব ব্যানারে অংশ নেয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তরের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এরপর উপাচার্য ক্যাম্পাসের আমতলায় বিভাগসমূহের অংশগ্রহণে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী শিক্ষা ও গবেষণা প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।

এছাড়া এদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আয়োজনের শুরুতে জুলাই বিল্পবের উপর তৈরি একটি ডকুমেন্টারী প্রদর্শন করা হয়। এসময় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আলীনূর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। এছাড়া ডিন কমিটির সভাপতি থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান, ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক এডুকেশন এন্ড রিসার্চের পরিচালক অধ্যাপক ড. ইকবাল হোছাইন ও প্রেস প্রশাসক অধ্যাপক ড. এ কে এম মফিজুল ইসলামসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভায় ডিনদের মধ্য থেকে থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ ও আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাসির উদ্দিন মিঝি বক্তব্য রাখেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট। শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ‘আধুনিক শিক্ষার সাথে ইসলামী শিক্ষার সংমিশ্রণ ঘটানোর জন্য আন্তর্জাতিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। আজকের দিনে আমরা অঙ্গীকার করতে চাই, সবাই মিলে আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়কে তার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের কল্যাণ ও অঙ্গিকার সাধন করাই হবে আমাদের স্বার্থ। পিছিয়ে পড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে আমাদের শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে যেতে হবে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে মডেল বিবেচনা করে এটিকে আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপ দিতে চাই।’

প্রসঙ্গত, ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে দুলালপুর-শান্তিডাঙ্গায় ১৭৫ একর জায়গাজুড়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই হিসেবে প্রতিবছর ২২ নভেম্বর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পালিত হয়ে আসছে। কিন্তু এবার দিনটি ছুটির দিন হওয়ায় এবং একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে উপাচার্যের অংশ নেওয়ার কথা থাকায় ২২নভেম্বরের পরিবর্তে ২৫ নভেম্বর দিবস উদযাপনের আয়োজন করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here