ডেস্ক রিপোর্ট : : যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় উপস্থাপিকা অপরাহ উইনফ্রের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে প্রিন্স হ্যারি ও ব্রিটিশ রাজপরিবারের ছোট পুত্রবধূ মেগান মার্কেলের তোলা বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগ উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে বাকিংহাম প্যালেস। একইসঙ্গে অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৯ মার্চ) এক বিবৃতিতে মেগান মার্কেলের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের অবস্থান এভাবেই জানায় রাজপরিবার। এছাড়া অভিযোগটি গোপনে খতিয়ে দেখা হবে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়।

সাক্ষাৎকারে অপরাহ উইনফ্রেকে ব্রিটিশ রাজপরিবারের ছোট পুত্রবধূ মেগান মার্কেল জানান, তার সন্তানের শরীরের ত্বক ঠিক কতোটা কালো হবে, তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যরা। একইসঙ্গে রাজপরিবারের সদস্যরা এটা নিয়ে পেছনে পেছনে কথাও বলতেন। এমনকি সন্তানের গায়ের রং কতোটা কালো হবে এটা নিয়ে স্বামী প্রিন্স হ্যারিকে পরিবারের এক ব্যক্তি প্রশ্ন পর্যন্ত করেছিলেন বলেও অভিযোগ করেন মেগান।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, এই সাক্ষাৎকার সম্প্রচার হওয়ার পরই বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানাতে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছিল চাপও। এরপর রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যরা জরুরি বৈঠকে (ক্রাইসিস  মিটিং) বসার পর বাকিংহাম প্যালেস থেকে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। প্যালেসের মতে, মেগান মার্কেল সব সময়ই তাদের পরিবারের ভালোবাসার সদস্য হিসেবে রয়ে যাবেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত কযেক বছরে হ্যারি ও মেগানকে যে চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে; এটা বিস্তারিত শুনে পুরো রাজপরিবার ব্যথিত হয়েছে। বর্ণবিদ্বেষ নিয়ে তোলা অভিযোগটি উদ্বেগজনক। আমরা এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি এবং বিষয়টি গোপনে খতিয়ে দেখা হবে। প্রিন্স হ্যারি, মেগান মার্কেল এবং তাদের সন্তান আর্চি- সব সময়ই রাজপরিবারের ভালোবাসার সদস্য হিসেবে রয়ে যাবে।’

আলোড়ন সৃষ্টিকারী ওই সাক্ষাৎকারে মেগান মার্কেল বলেছিলেন, ‘তার সন্তান আর্চি জন্ম নেওয়ার আগেই তার গায়ের রং ঠিক কতোটা কালো হবে, তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যরা। আর তাদের এই ‘দুশ্চিন্তাই’ স্পষ্ট করে দেয় যে, তার ছেলেকে কেন প্রিন্স উপাধি দেওয়া হয়নি।’

এছাড়া বিয়ের পর (রাজপরিবারের) কারও কাছ থেকে কোনো ধরনের সাহায্য বা সহযোগিতা না পেয়ে নিজের ক্ষতি করার, এমনকি আত্মহত্যা করার কথাও তিনি চিন্তা করতে শুরু করেছিলেন বলে জানান ব্রিটিশ রাজপরিবারের এই ছোট পুত্রবধূ।

সাক্ষাৎকারে মেগান বলেন, ‘(আমার গর্ভে সন্তান আসার পর) তারা কেউই তাকে প্রিন্স বা প্রিন্সেস হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চাচ্ছিলেন না। এমনকি ছেলে হবে না মেয়ে; রাজপরিবারের কেউ এটাও জানতেন না। অর্থাৎ এটা প্রটোকলের বাইরে এবং বুঝতে পারি- জন্মের পর আমার সন্তান (প্রটোকল অনুযায়ী) নিরাপত্তা পেতে যাচ্ছে না।’

‘‘আমার প্রেগন্যান্সির সবগুলো মাসজুড়ে এই একই পরিস্থিতি চলছিল। অনাগত সন্তানের বিষয়ে ভেতরে ভেতরে কী কী কথাবার্তা চলছে সেগুলোও আমরা শুনতে পারছিলাম- ‘তাকে কোনো নিরাপত্তা দেওয়া হবে না, রাজপুত্র বা রাজকুমারী উপাধিও দেওয়া হবে না’। এমনকি আমার সন্তানের গায়ের রং ঠিক কতোটা কালো হবে- সে বিষয়েও আমাদের পেছনে তাদেরকে আলোচনা করতে শুনতে পেতাম।’’

তবে অপরাহ উইনফ্রে জানিয়েছেন, মেগান মার্কেলের ছেলে আর্চির গায়ের রং নিয়ে বিদ্বেষমূলক মন্তব্যকারী ব্যক্তি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ বা তার স্বামী ডিউক অব এডিনবার্গ নয় বলে নিশ্চিত করেছেন প্রিন্স হ্যারি।

এ বিষয়ে আরও জিজ্ঞাসা করা হলে গত সোমবার জনপ্রিয় এই উপস্থাপিকা বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিটি আসলে কে; এটা জানতে ক্যামেরার সামনে জিজ্ঞাসা করার পাশাপাশি ক্যামেরা বন্ধ থাকার সময়ও ব্যক্তিগত ভাবে জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রিন্স আমার কাছে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেননি।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here