লংগদু উপজেলার ভাসাইন্যাআদম ইউনিয়নের ৮নং চাইল্যাতলী ওয়ার্ডের আলীম উদ্দিন গ্রুপ এলাকায় গত শুক্রবার রাত সাড়ে দশটার সময় বন্যহাতি তান্ডব চালিয়ে কমপক্ষে ১৪টি বসত ঘর ভাংচুর করেছে। এছাড়া এক একর পাকা ধান খেয়ে সাবার করেছে।

সূত্রে জানাগেছে, বন্যহাতির দলটি  দিনের বেলায় পাহাড়ের কাছাকাছি জঙ্গলে অবস্থান করে থাকে। রাতের বেলায় লোকালয়ে এসে খাবারের খোজে ব্যাপক আক্রমন চালিয়ে জন বসতি, ক্ষেত ফসল, ও জান মালের ক্ষয় ক্ষতি কওে থাকে। চাইল্যাতলীর বাসিন্দা মোঃ রহমত আলী জানান, রাতের বেলায় যখন সবাই ঘুম ছিল তখনই ৭/৮টি বন্যহাতির একটি দল বসত ঘরে আক্রমন করে ভাংচুর মুরু করে। রাত আড়াইটা পযন্ত এই হাতির দরটি ভাংচুরের তান্ডব চালায়। পরে এক একরের মত পাকা ধানের জমি খেয়ে সাবার করেছে।  এতে যারা বেশি ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে তারা হলেন, মোঃ মানিক, মোঃ হেলাল মিয়া, আব্দুস সাত্তার, আইজ উদ্দিন, নুর ইসলাম। মোঃ রহমত আলী জানান, বর্তমানে বন্যহাতিগুলো চাইল্যাতলীর নলুয়া এলাকায় অবস্থান করছে। হাতির পালের সাথে ২টি বাচ্ছা হাতি থাকায় হাতিগুলো এই এলাকা থেকে কোথাও যাচ্ছেনা।

ভাসাইন্যাদম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ জহির উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি আরো জানান, ১৩/১৪টি বন্যহাতি গত ২মাস পূর্বে তিন দিন ধরে চাইল্যতলী ও পূর্ব চাইল্যাতলীর লোকালয়ে এসে ব্যাপক তান্ডিব চালিয়েছে। বন্যহাতির আক্রমন থেকে বাঁচার জন্য ঘর থেকে দৌড়ে পালানোর সময় একটি বন্যহাতি হাফিজ উদ্দিনকে(৫৫) আক্রমন করে শুড় দিয়ে পেচিয়ে উপর থেকে আচড়ে মারে পরে পা দিয়ে পারা মারলে ঘটনা স্থলেই মার্মান্তিকভাবে তাঁর মৃত্যু হয়।  আহত দু’জন মোঃ সোলেমান(২৫) ও উছমান গণি খোকন (২৮) কোন মতে প্রাণে বেঁেচ গেলেও উন্নত চিকিৎসা না পেলে হত পঙ্গুত্ব বরণ করতে হবে তাদের।

লংগদু উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ তোফাজ্জল হোসেন জানান, বর্তমানে চাইল্যাতলী এলাকায় বন্যহাতির আক্রমনে ৩৫ টি পরিবাররে ঘরবাড়ী লন্ড-ভন্ড হয়ে যাওয়ায় তারা এখন খোলা আকাশের নিছে তাবু টাকিয়ে রাত্রি যাপন করছেন। এছাড়া শতাধিক একরের ক্ষেত ফসল খেয়ে ও পায়ে পদদলিত করে বিনষ্ট করেছে। বর্তমানে বন্যহাতির উৎপাতে এলাকার মানুষ অতীষ্ঠ হয়ে উঠেছে। অনেক চেষ্টা করেও হাতিগুলোকে এলাকা থেকে তাড়ারো যাচ্ছেনা। ভাসাইন্যাদম ইউনিয়নের খাগড়াছড়ি বাজার সংলগ্ন এলাকার শেখপাড়া, বড় মাঠপাড়া, উত্তর কাঠালতলী, দক্ষিন কাঠালতলী গ্রাম ছাড়াও আশ-পাশের এলাকার লোকজন হাতির আক্রমনের ভয়ে পহারা বসিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।

ঐ এলাকার বাসিন্দা মোঃ রহমত আলী জানান, অনেকে বাড়ী-ভিটা ছেড়ে অন্যস্থানে বহুকষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।  এলাকার অনেকের বসতবাড়ী বর্তমানে পরিত্যাক্ত অবস্থায় আছে। হাতির উৎপাত ঠেকাতে রাতের বেলায় মশাল জ্বালিয়ে চারিদিকে আলোকিত করে ও ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ব্যাপক শব্দ করা হচ্ছে। কিন্তু কোন কৌশলেই হাতি তাড়ানো যাচ্ছেনা।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/আলমগীর মানিক/রাঙ্গামাটি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here