পাবনা : ফেসবুকে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) সম্পর্কে কটুক্তির গুজব ছড়িয়ে দেয়াকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বনগ্রামে এখনও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
স্কুলগামী ছেলে মেয়েরা ভয় পাচ্ছে স্কুলে যেতে। বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেনা বয়স্করা। এ ঘটনায় থানায় পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত পুলিশ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে।
সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরী করেছে উপজেলা প্রশাসন। এদিকে ঘটনার সুষ্ঠ তদনেত্ম উপজেলা পরিষদের পক্ষে ৫ সদস্যসের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ঘটনার তিন দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত সেদিনের ভয়াবহ স্মৃতি ভুলতে পারছে না ক্ষতিগ্রস্থরা। তারা আতংকে বাড়ির বাইরে বেড় হচ্ছেনা।
ক্ষতিগ্রস্থরা মনে করছেন, লুটপাটের উদ্দেশেই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি দাবী করেছেন জামাত-শিবির ও বিএনপি সমর্থিতরা পরিকল্পিত ভাবে এগুজব ছড়িয়ে এ সহিংস ঘটনা ঘটিয়েছে।
এদিকে হামলার পর থেকে ভয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে হিন্দু এলাকার ছেলে মেয়েরা। স্কুলে গেলেও ভয়ে চলে আসছে বাড়ি। বয়স্করাও বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছেন ।
পুলিশ এলাকায় থাকলেও পরে চলে গেলে আবার কি না হয় এমন আশংকা করছেন এলাকাবাসী। ক্ষতিগ্রস্থ অনেকে বলেছেন, লুটপাটের উদ্দেশেই এ হামলা করা হয়েছে।
কথিত কটুক্তিকারী রাজি সাহার বাব পুলিশী হেফাজতে থাকা বাবলু সাহা বলেন, সে এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তিনি বলেন, আমার ছেলেই যে এ গুজব ছড়িয়েছে তা আমার জানা নাই। আমার তো সব শেষে। আমার যা হওয়ার হয়ে গেছে।
আতাইকুলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কোরবান আলী বিশ্বাস বলেন, এই হামলা জামায়া-শিবির পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ঘটিয়েছে বলে দাবী করেন।
সাঁথিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন, উপজেলা পরিষদের পক্ষে, পৌর মেয়র ও ৪ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে সদস্য করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রান বিতরণ করা হয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যে উপজেলা পরিষদের পক্ষে ত্রান বিতরণ করা হবে।
আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ এবং বাবলু সাহা বাদী হয়ে থানায় পৃথক দু’টি মামলা দায়ের হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
তবে ক্ষতিগ্রস্থরা মনে করেন এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আবারও হিন্দু মুসলিন একত্রিত বসবাস করবে এবং এলাকায় ফিরে আসবে শান্তি এটাই এলাকাবাসী প্রত্যাশা।
কলিট তালুকদার/