ইয়ানূর রহমান,যশোর প্রতিনিধি ::
যশোরের বেনাপোলে ২৩ কোটি টাকা ঋণখেলাপির দায়ে চলচ্চিত্র প্রযোজক সন্ধানী কথাচিত্রের মালিক গোলাম মোর্শেদের বাড়ি দখলে নিয়েছে ইসলামী ব্যাংক। বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুরে বেনাপোল ইসলামী ব্যাংকের বেনাপোল শাখার ম্যানেজার মোস্তফা মেহেদী হোসাইন চৌধুরী বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীদের জানান।
এর আগে গত মঙ্গলবার যশোরের যুগ্ম জেলা জজ (১ম) ও অর্থঋণ আদালতের নির্দেশে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল গোলাম মোর্শেদের বাড়িটি ইসলামী ব্যাংককে বুঝিয়ে দেয়। বেনাপোল পৌরসভার বাহাদুরপুর রোডের ভবেরবেড় মৌজায় নির্মিত বাড়িটির দখল বুঝে দেন ইসলামী ব্যাংক বেনাপোল শাখার ম্যানেজার। পরে বাড়ির গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
ইসলামী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালে জমি ও বাড়ি মর্টগেজ রেখে ইসলামী ব্যাংক বেনাপোল শাখা থেকে ২৩ কোটি টাকা ঋণ নেন গোলাম মোর্শেদ। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ২৩ কোটি টাকা উদ্ধারের জন্য যশোর অর্থঋণ আদালতে মামলা করে।
কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ব্যাংকের পক্ষে রায় দেন আদালত। এরপর শার্শা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ২০১৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জমি ও বাড়ি ব্যাংকের অনুকূলে রেজিস্ট্রি হয়। ওই বছর থেকে বাড়ির জমির খাজনাদি পরিশোধ করে আসছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দীর্ঘদিনেও গোলাম মোর্শেদ দখল ছেড়ে না দেওয়ায় বাড়ি উদ্ধারের জন্য আদালতে আবেদন করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
২০২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ব্যাংককে বাড়ির দখল বুঝিয়ে দেওয়ার আদেশ দেন অর্থঋণ আদালত। আদালতের নির্দেশে সার্ভেয়ার গোলাম মোস্তফা ও শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল ওই বাড়িটি ব্যাংকের ম্যানেজারকে বুঝিয়ে দেন।
ইসলামী ব্যাংক বেনাপোল শাখার ম্যানেজার মোস্তফা মেহেদী হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‌‘আদালতের প্রতিনিধি দল এসে জমি ও বাড়ির দখল আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে। এই জমি ও বাড়ি এখন ব্যাংকের নিজস্ব সম্পত্তি। পরবর্তীতে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবে।’
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গোলাম মোর্শেদের বাড়ি বেনাপোলের ঘিবা গ্রামে। পেশায় চাষি হলেও তার ছোট ভাই বাবুল আক্তার সার আমদানি করে কোটিপতি হন। পরে গোলাম মোর্শেদ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে চাল আমদানি শুরু করেন। দিনদিন বেড়ে যায় ব্যবসার পরিসর। বেনাপোলে একটি বাড়ি, একটি বাগানবাড়ি ও কাগজপুকুর এলাকায় অটোরাইস মিল করেন।
এরপর সন্ধানী কথাচিত্রের ব্যানারে চলচ্চিত্র তৈরি করেন। কয়েকটি চলচ্চিত্র ফ্লপ করায় গোলাম মোর্শেদ নিজেকে গুটিয়ে নেন। একই ব্যাংকের শাখা থেকে ২৫ কোটি টাকা ঋণ নেন তার ছোট ভাই বাবুল আক্তার। এ ঘটনায় বাবুলের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে ঋণখেলাপির মামলা চলমান।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here