’৭১ এ হানাদারদের নৃশংসা গণহত্যার অন্যতম নীরব সাক্ষী গণকবর ও বধ্যভূমি। স্বাধীনতা ৪০ বছর পরও মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক উত্তর রণাঙ্গনের ১১নং সেক্টরের প্রধান যুদ্ধক্ষেত্র বকশীগঞ্জের বধ্যভূমি ও গণকবরগুলো অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

আজও বধ্যভূমি ও গণকবর সংরক্ষণে কোন কাজ হয়নি। চিহ্নিত হয়নি কোন বধ্যভূমি। হারিয়ে  যেতে বসেছে সন্মুখযুদ্ধে কর্নেল তাহেরের পা হারাননোর স্থান।

’৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বকশীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত হয় হত্যাযজ্ঞ। হানাদার বাহিনী বকশীগঞ্জের মাটিতে গণধর্ষণ ও নিরীহ বাঙালীর উপর হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। বকশীগঞ্জ এন এম উচ্চ বিদ্যালয়, উলফাতুন নেছা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও কামালপুর বিডিআর ক্যাম্পসহ হানাদার বাহিনী গড়ে তোলে নির্যাতন সেল। সেখানে শত শত মুক্তিকামী মানুষকে ধরে এনে লাইনে দাড়ঁ করে চোখ বেধেঁ নির্বিচারে হত্যা করা হয়। সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি ছিল কামালপুরে।

এছাড়াও বকশীগঞ্জ  এন এম উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তর পাশের বধ্যভূমিটি মৃত্যুকূপ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এসব বধ্যভূমিতে একই গর্তে ১৫/২০ জনকে হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। অপর বধ্যভূমিটি বকশীগঞ্জের পুরাতন গরুহাট অবিস্থত। সেখানে মোখলেছ চেয়ারম্যানসহ প্রায় দু’শতাধিক নরনারীকে গণকবর দেওয়া হয়েছে।

৩১ বেলুচ রেজিমেন্টের কুখ্যাত মেজর আইযূব ও কামালপুর দূর্গের গ্যারিসন কমান্ডর আহসান মালিক খান বকশীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত গণহত্যা এবং গণধর্ষণের পেছনে মূখ্য ভূমিকা পালন করেছে।

উলেস্নখিত বধ্যভূমি ছাড়াও কামালপুর স্থল বন্দরের সংলগ্নে এবং কামালপুর উপস্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পাশে গণকবরসহ প্রায় অর্ধশত গণকবর রয়েছে। শনাক্তকরণের অভাবে কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে এসব গণকবর।

১৪ নভেন্বর কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা কামালপুরের পাক ক্যাম্পে  সম্মুখ যুদ্ধে শত্রুপক্ষের একটি মার্টর শেলের আগাতে তাহেরের বাম পা হারান। ওই স্থানটিও হারিয়ে যাচ্ছে কালের আবর্তে। এসব স্মৃতিচিহ্ন শনাক্ত করে সংরক্ষণ করার কোন উদ্দ্যোগ না নিলে ভবিষ্যতের প্রজন্ম জানতে পারবে না এসব গণকবর ও বধ্যভূমির সঠিক ইতিহাস।

ইউনাইটেড নিউজি ২৪ ডট কম/ছাইদুর রহমান/জামালপুর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here