যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, চলতি মাসেই মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে এ ব্যাপারে সমঝোতা স্মারক সই হবে। রোববার রাজধানীর সড়ক ভবনে তাৎক্ষণিক এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বর্তমান মেয়াদেই পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করতে জোর তৎপরতা চালিয়ে এসেছে সরকার। গত বছর সেতুর সমীক্ষার কাজ শেষ হয়। প্রধান দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংকসহ চার উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গে ঋণ চুক্তিও করে সরকার।
কিন্তু এ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন স্থগিত করায় সেতু তৈরির কাজ পিছিয়ে যায়। অবশেষে বিশ্বব্যাংকের আশা ছেড়ে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে সেতু তৈরির কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপর নতুন করে অর্থের সন্ধান করা শুরু করলে এগিয়ে আসে মালয়েশিয়া। তাদের ৬৬০ কোটি রিঙ্গিত অর্থায়নের আশ্বাসসহ নতুন চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন যোগাযোগমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সেতু তৈরির জন্য দুই পাড়ে মাটি ভরাট, নদী তীরে কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড তৈরির কাজ, নদী শাসন ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণের অর্থ দেয়া, পুনর্বাসন সাইট তৈরির কাজের ৮০%-ই এরইমধ্যে শেষ হয়েছে। তাই এসব কাজ নতুন করে করতে হবে না।
এদিকে, মালয়েশিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা বার্নামা শনিবার এক প্রতিবেদনে জানায়, আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি পদ্মা সেতু নির্মাণে মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে পারে। সেতু নির্মাণে দেশটি ৬৬০ কোটি রিঙ্গিত দেবে।
এতে আরো বলা হয়, মালয়েশিয়া সরকারের ভারত ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক (অবকাঠামো) বিশেষ দূত দাতুক সেরি সামি ভেলু সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দুই দেশের সরকারের মধ্যে এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।
বার্নামাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে দাতুক সেরি সামি ভেলু বলেন, ‘আমরা এক মাস ধরে কাজ করেছি। অবশেষে প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের সম্মতিক্রমে বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়েছি, পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে আমরা প্রস্তুত।’
প্রসঙ্গত, ঠিকাদার নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় গত বছর বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে ১২০ কোটি টাকা ঋণ স্থগিতের ঘোষণা দেয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত বছরের ১০ অক্টোবর গণমাধ্যমের কাছে বিশ্বব্যাংকের ঋণ স্থগিতের এ তথ্য জানান।
উল্লেখ্য, ২৯০ কোটি ডলার ব্যয়ে ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু তৈরিতে বিশ্বব্যংকের ১২০ কোটি ডলার দেয়ার কথা ছিল। এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাপানি উন্নয়ন সহায়তা সংস্থা (জাইকা) আর ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) বাকি অর্থ দেয়ার কথা রয়েছে।