ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায় ২০১১-২০১২ অর্থ বছরে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান (কর্মসৃজন) কর্মসূচি বাস-বায়ন কাজের ১ম পর্যায়ের প্রকল্পের কাজে ব্যাপক দুর্নীতি,অনিয়ম ও হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ২০ ইউনিয়নে ৬৩৩৪ টি কার্ডের মাধ্যমে ৪০ দিনের এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন কাজের বিপরীতে ৪ কোটি ৪৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকা প্রকল্প ব্যয় গত ১৯ অক্টোবর’১১ স্থানীয় কমিটির সভায় অনুমোদন করা হয়েছে।
এর পর থেকেই শুর” হয়েছে এই টাকা হরিলুটের মহোৎসব। সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার ফলে প্রকল্পের কোন নীতিমালার তোয়াক্কা না করে তরিগড়ি করে শ্রমিক নিবন্ধন এবং প্রকল্প দাখিল করে প্রকল্পের টাকা হরিলুট করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ব্যাংক থেকে অর্ধেক কাজের টাকা উত্তোলন করা হলেও মাঠ পর্যায়ে এক পঞ্চমাংশ কাজ বাস্তবায়ন হয়নি। একটি মহল বাকি অর্ধেক টাকা ফেরাত গেছে মর্মে গুজব ছড়িয়ে আত্নসাতের পায়তারা করছে বলে অভিযোগ।
এলাকাবাসী স্থানীয় সংসদ সদস,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তরের একাধিক লিখিত অভিযোগ এবং রামভদ্রপুর ও সিংহেশ্বর ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, প্রকল্পে কোন নীতিমালা মানা হয়নি। নারী কোটা অর্ধেকেও পূরণ করা হয়নি। ধনাট্য স”ছল ব্যক্তিদের প্রকল্পে নিবন্ধন করা হয়েছ। এ জন্য তারা রাস্তায় গিয়ে কাজও করেন না। একই পরিবার থেকে একাধিক ব্যক্তি নিবন্ধন করা হয়েছে। মাঠ পর্য়ায়ে প্রকল্পে শ্রমিকের উপসি’তি নেই বললেই চলে। ভূয়া শ্রমিক নিবন্ধন করে ব্যাংকে ভাড়ায় লো্ক এনে হিসাব খুলে প্রকল্পের টাকা সরাসরি আত্নসাৎ করা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রামভদ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য জানান, চেয়ারম্যান ৩০ টি এবং সদস্যরা ২ টি করে কার্ডে ভাড়াটে লো্ক দিয়ে শ্রমিক নিবন্ধন ও ব্যাংকে হিসাব খুলে প্রকল্পের টাকা নিজেদের পকেটে নিচ্ছেছন। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করে,তার ইউনিয়নের অন্যান্য ইউনিয়নের চেয়ে বেশি কাজ হয়েছে বলে দাবি করেন। একই অভিযোগ সিংহেশ্বর ইউনিয়নে। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যানের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। ২০ টি ইউনিয়নের চিত্রই অভিন্ন।
ইউনিয়ন ওয়ারী কার্ড ধারীর সংখ্যা, ছনধারা ৩১৫ টি, রামভদ্রপুর ৩৫৫ টি,ভাইটকান্দি৩২৬ টি,সিংহেশ্বর ৩৮১ টি,ফুলপুর ২৯৪ টি,পয়ারী ২৬৯ টি, রহিমগঞ্জ ৩২৯ টি,বালিখা ২৯২ টি, কাকনী ২৯৬ টি, রূপসী ৩৪৪ টি, বালিয়া ২৭২ টি,রওলা ২৯৭ টি,ঢাকুয়া ২৯২ টি, বানিহালা ২৮৪ টি,তারাকান্দা ৩৬৭, গালাগাঁও ৩৫১, কামারগাঁও ৩৫০,রামপুর ২৮৩,কামারিয়া ৩২৩ ও বিসকা ইউনিয়নে ৪১৪ টি। কর্মসৃজন প্রকল্পের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে, বরাদ্দকৃত কার্ডের মধ্যে অর্ধেক বিতরণ হয়েছে দলীয়ভাবে আর অর্ধেক ইউনিয়ন পরিষদের তত্ববধানে। অভিয়োগ রয়েছে, এই প্রকল্পে হতদরিদ্রদের ভাগ্যে বিনামূল্যে কার্ড পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। জনশ্র”তি রয়েছে। ১ থেকে ২ হাজার টাকা নগদ বিনিময়ের পর অনেকে কার্ড পেয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ সিরাজুল ইসলাম সিদ্দীকী বলেন,কোন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/