ডেস্ক রিপোর্ট::  ফরিদপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের করা তিনটি মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ৫৮ জন আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন পৃথক তিন আদালত। এর মধ্যে তিনজন শিক্ষার্থী রয়েছেন। পাশাপাশি আদালত সদরপুরে দায়ের করা একটি মামলায় তিনজনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।

ফরিদপুরে কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ক শাহ মো. আরাফাতকেও আটক করা হয়। তার মা ময়না বেগম ছেলের অনার্স চতুর্থ বর্ষের মৌখিক পরীক্ষার কথা বিবেচনায় নিয়ে তার মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।

রোববার (২৮ জুলাই) দুপুরে ফরিদপুরের সদর, ভাঙ্গা ও সদরপুর আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটগণ জামিন নামঞ্জুরের আদেশ দেন।

সদরপুর আদালতে সদরপুর থানা পুলিশের করা মামলায় গ্রেপ্তার ১০ আসামি জামিন আবেদন করলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গৌর চন্দ্র সাহা তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন। পুলিশ তাদের পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানালে আদালত তিনজনের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

তারা হলেন, সদরপুরের পূর্ব শ্যামপুর মহল্লার বাসিন্দা মৃত হাসেম বেপারীর ছেলে মাসুদ রানা এবং পাশের চরভদ্রাসন উপজেলার ধোপাডাঙ্গী গ্রামের হাবিবুর রহমানের দুই ছেলে রিশাদ বেগ ও সজীব বেগ।

অন্যদিকে ফরিদপুর কোতয়ালী থানা পুলিশের করা মামলায় গ্রেপ্তার ২৭ জনের জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন সদর আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামান। এর মধ্যে ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থী সদরের মাচ্চর ইউনিয়নের শিবরামপুর এলাকার শাহ মো. শের আলমের ছেলে শাহ মো. আরাফাত ও নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের বিলনালিয়া গ্রামের বাসিন্দা কাদের বিশ্বাসের ছেলে জনি বিশ্বাস রয়েছেন। তারা দুইজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফরিদপুরে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

এছাড়া ভাঙ্গা থানা পুলিশের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার ২১ জন জামিনের আবেদন করলে ওই আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাছিম মাহমুদ তাদেরও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। তবে ফরিদপুর কোতয়ালী ও ভাঙ্গা থানা পুলিশের পক্ষে গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে এ মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. জসীমউদ্দিন মৃধা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফরিদপুরের তিনটি থানায় পুলিশের করা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ৫৮ আসামির জামিন বাতিল করেছেন আদালত। সদরপুরের মামলায় তিনজনকে একদিন করে রিমান্ড দিয়েছেন। যাদের জামিন বাতিল করা হয়েছে তাদের পক্ষে আগামীকাল সোমবার আবার স্ব স্ব আদালতে জামিনের আবেদন জানানো হবে।

কোটা আন্দোলনে ফরিদপুরে এ পর্যন্ত দায়ের হওয়া চারটি মধ্যে ফরিদপুরের কোতোয়ালী ও ভাঙ্গা থানায় একটি করে এবং সদরপুর থানায় দুটি মামলা করা হয়েছে। তিনটি মামলার মধ্যে ভাঙ্গায় ২৫০ থেকে ৩০০ এবং অন্য দুটি মামলায় অজ্ঞাতনামা ‘আরও অনেকে’ আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

সমন্বয়ক শাহ মো. আরাফাতের মা ময়না বেগম বলেন, ছাত্ররা তাদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে যৌক্তিক একটি দাবি নিয়ে আন্দোলনে নামে। সরকার তাদের দাবি মেনে নেওয়ার পরে ছাত্ররা তো কোনো আন্দোলন করেনি। এখন সরকার ছাত্রদের নামে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। আমার ছেলে অনার্স চতুর্থ বর্ষের লিখিত পরীক্ষা শেষ করেছে। সামনে মৌখিক পরীক্ষা। এ অবস্থায় তাকে আটকে রাখা হলে তার শিক্ষা জীবন ব্যহত হতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here