ডেস্ক রিপোর্ট::  যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের চলমান আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্তকে মন্ত্রিসভা থেকে বহিষ্কার করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। মঙ্গলবার রাতে ইসায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করা হয়েছে এ তথ্য।

রাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে চলা দ্বন্দ্ব এবং তার জেরে পরস্পরের প্রতি আস্থার সংকট থেকেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে এক বার্তায় উল্লেখ করেছেন নেতানিয়াহু। সংক্ষিপ্ত এক বার্তায় এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মধ্যকার আস্থা ভেঙে গেছে।”

বার্তায় নেতানিয়াহু আরও বলেছেন, “তার (গ্যালান্ত) সঙ্গে আমার যেসব মতপার্থক্য ছিল, সেসব নিরসনের জন্য আমি অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেসব চেষ্টা কোনো কাজে তো আসেই নি, উপরন্তু জনগণের সামনে খুবই অগ্রহণযোগ্যভাবে প্রকাশিত হয়েছে।”

“সবচেয়ে বাজে ব্যাপার হলো, বিভিন্ন ইস্যুতে আমাদের মতপার্থক্য শত্রুদেরও নজরে এসেছে এবং তারা এটি উপভোগের পাশাপাশি এ থেকে ফায়দা তোলারও চেষ্টা করছে। তাই আমার সামনে আর কোনো বিকল্প ছিল না।”

অন্যদিকে ইয়োয়াভ গ্যালান্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক সংক্ষিপ্ত বার্তায় বলেছেন, “যেখানে, যে অবস্থাতেই থাকি না কেন, যতদিন বেঁচে আছি— আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিশন থাকবে ইসরায়েল এবং তার নাগরিকদের নিরাপত্তা।”

পরে একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গ্যালান্ত বলেন, তিনটি ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরে নেতানিয়াহুর সঙ্গে মতানৈক্য চলছিল তার। এই ইস্যুগুলো হলো— অতি রক্ষণশীল ইহুদিদের সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্তি, হামাসের কব্জায় থাকা জিম্মিদের উদ্ধারে নেতানিয়াহু এবং মন্ত্রিসভায় তার অনুগতদের উদাসীনতা এবং হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলার দাপ্তরিক তদন্ত শুরু করা নিয়ে নেতানিয়াহুর গড়িমসি।

টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গ্যালান্ত আরও বলেন, “বিশেষ করে জিম্মিদের মুক্তির ব্যাপারে কোনো প্রকার উদাসীনতা ক্ষমার অযোগ্য। জিম্মিদের স্বজন ও পরিবারের সদস্যরা যে ভয়াবহ দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, শিগগির তার অবসান না হলে পুরো সমাজ ভুল পথে চালিত হবে।”

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে যে বিবৃতিটি দেওয়া হয়েছে, সেখানে গ্যালান্তের অব্যাহতির পাশাপাশি আরও বলা হয়েছে, এখন থেকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন দেশটির বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ, আর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকবেন নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক দল লিকুদ পার্টির অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা এবং এমপি গিদেওন সা’আর।

নতুন দায়িত্বপ্রাপ্তির পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে ইসরায়েল কাৎজ বলেন, “ইসরায়েলের এবং তার নাগরিকদের রক্ষার গুরুদায়িত্বকে আমি আমার মিশন এবং পবিত্র দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করলাম।”

নেতানিয়াহু এবং নিজেদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট শুরুর দিন, অর্থাৎ গতকাল মঙ্গলবার এ পদক্ষেপ নিলেন নেতানিয়াহু।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here