
কলিট তালুকদার, পাবনা প্রতিনিধি :: আমাদের সমাজে প্রতি পদক্ষেপে নানা চরাই উৎরাই পেরিয়ে জীবনে সামনে এগিয়ে যেতে হয় মেয়েদের।
শহরাঞ্চলগুলোতে মেয়েরা আজকাল বাইসাইকেল-মটরসাইকেল চালিয়ে স্কুল কলেজে গেলেও গ্রামাঞ্চলের মেয়েরা নানা আলোচনা-সমালোচনার ভয়ে সেসব ব্যাবহার করতে পারে না।
তবে পাবনা বেড়া উপজেলার কাশীনাথপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী রাফিয়া আক্তার মিম ও বেবী নাজনীন সে ধারণা পাল্টে দিচ্ছে। সমাজের সমালোচনাকে পেছনে ফেলে তারা দুজনে ১৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে প্রতিদিন মোটর সাইকেল চালিয়ে কলেজে আসে। আর তাদের দেখাদেখি উদ্ভুদ্ধ হয়ে অন্য মেয়েরাও দুর থেকে কলেজে আসতে মটরসাইকেল ও বাইসাইকেল চালানো শিখছে।
কলেজ গিয়ে দেখা যায়, ছুটির পর তারা রাস্তার পাশ দিয়ে মোটর সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছে। একাদশ শ্রেণির ছাত্রী বেবী নাজনীন জানায়, ‘সে প্রতিদিন ১০ কিলোমিটার দূর কাজীরহাট থেকে মোটর সাইকেল চালিয়ে কলেজে যাতায়াত করে। এতে করে তার সময় ও অর্থ দুই বেঁচে যায়। আগে যখন গাড়িতে যাতায়াত করত, তখন অনেক সময় সময়মত গাড়ী না পাওয়ার কারণে সময় মত কলেজে আসতে পারতো না।
ফলে পড়াশুনায় ব্যাঘাত ঘটতো। এখন সেই সমস্যা আর নেই। গাড়ির জন্য দাড়িয়ে থাকতে হয়না। নিজের মোটর সাইকেল নিজেই চালিয়ে কালেজে আসি। প্রথম প্রথম সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকত। কিন্তু এখন আর কেউ অবাক হয় না।
একাদশ শ্রেণীর আরেক ছাত্রী রাফিয়া আক্তার মিম। কলেজ থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ভাটিকয়া গ্রামে তার বাড়ি। কলেজে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি ও খারাপ। তাই যানবাহনে যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। মোটার সাইকেল কেনার পর কলেজ যেতে আর অসুবিধা হয় না। আগে থেকেই বাইসাইকেল চালাতে পারতো তাই মোটর সাইকেল চালাতে কোন অসুবিধা হয়না। মিম আরো বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা মেয়েরা কেন পিছিয়ে থাকবো, ছেলেরা যদি মোটর সাইকেল চালিয়ে যাতায়াত করতে পারে, তবে আমরা কেন পারব না।
কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম খান বলেন, প্রথম পর্যায়ে ব্যাপারটি দু’একজন সমালোচনার চোখে দেখলেও এখন সবকিছুই স্বাভাবিক। অন্য অনেক শিক্ষার্থীরাও এখন মোটর সাইকেলে যাতায়াত করে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। ওদের দেখাদেখি আরও কিছু মেয়ে উৎসাহী হয়েছে। আগামীতে দূর-দূরান্তের অনেক শিক্ষার্থীই মোটর সাইকেল কিনবে বলে শুনেছি।