ডেস্ক রিপোর্ট::  প্রচারণার ব্যানার, ফেস্টুন আর তোরণে ঢেকে আছে রাজবাড়ীর পৌরসভার প্রধান প্রধান সড়ক। সড়কের বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে শুরু করে ল্যাম্পপোস্ট, এমনকি শহরের সৌন্দর্য বর্ধনে সড়ক ডিভাইডারের মাঝে লাগানো গাছের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক নেতা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ব্যানার, পোস্টার ও প্লাকার্ড।

নিয়মনীতি ও আইনের তোয়াক্কা না করেই সড়কগুলোতে বাঁশ ও কাঁঠের কাঠামোতে লাগানো হয়েছে এসব ব্যানার-ফেস্টুন। এতে যেমন নষ্ট হচ্ছে শহরের সৌন্দর্য তেমনি ঘটছে নানা ধরনের দুর্ঘটনা। তাই শহর থেকে এসব ব্যানার, ফেস্টুন ও প্লাকার্ড অপসারণের দাবি শহরবাসীর।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাজবাড়ী পৌরসভার জেলা পরিষদের সামনে থেকে বড়পুল মোড় পর্যন্ত। বড়পুল থেকে শুরু করে ১নং রেলগেট পর্যন্ত তোরণ, বিলবোর্ড আর ব্যানার-ফেস্টুনের রাজত্ব। সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে এলাকার পাতি নেতারাও যেভাবে পেরেছেন নিজের বড় বড় ছবি সম্বলিত ব্যানার-পোস্টার লাগিয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন কোচিং সেন্টারসহ নানা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান লাগিয়েছে ব্যানার ও পোস্টার। এতে সৌন্দর্য হারাচ্ছে সবুজের শহর রাজবাড়ী।

রাজবাড়ী পৌরসভার বেশ কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয়। তারা বলেন, রাজবাড়ী ছোট্ট একটি শহর। এই শহরের সৌন্দর্য-ঐতিহ্য রয়েছে। জেলা পরিষদ থেকে রাজবাড়ীর ১নং রেলগেট রাজবাড়ী মুরগির ফার্ম পর্যন্ত শহরের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য সড়ক ডিভাইডারের মাঝে সবুজ গাছ লাগিয়েছে পৌরসভা। কিন্তু এসব গাছে বর্তমানে ব্যানার-ফেস্টুন রাজবাড়ী শহরের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। এগুলো দ্রুত অপসারণের দাবিও তাদের।

শহরের শ্রীপুর এলাকার ব্যবসায়ী তুমিদ হাসান বলেন, কয়েকদিন আগেই সড়ক ভবনের আগে তিন রাস্তার মোড়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এক আরোহীর মৃত্যু হয়। রাস্তা পার হওয়ার সময় প্রাইভেট কারের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তিন রাস্তার মোড়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের ব্যানার ও প্লাকার্ড থাকার কারণে রাস্তার বিপরীত পাশে কিছু দেখতে পাননি তিনি। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। তাই অতি দ্রুত শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে থাকা ব্যানার, ফেস্টুন ও প্লাকার্ড অপসারণ করতে হবে। না হলে এভাবে দুর্ঘটনা বাড়তেই থাকবে।

সম্প্রতি রাজবাড়ী পৌরসভাসহ জেলায় বিভিন্নস্থানে ব্যানার-ফেস্টুন লাগিয়েছেন আব্দুল কাদের ফকীর। তিনি শিক্ষক সমিতির সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী। তিনি বলেন, আমার ফেস্টুনগুলো বড় নেতাদের হাটুর নিচে। দীর্ঘদিন রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের অনেক বড় বড় নেতাদের তোরণ, ব্যানার ফেস্টুন রয়েছে। আমি সবেমাত্র এসব ফেস্টুন লাগিয়েছি। শিক্ষক সমিতির সম্মেলনের পর আমার ফেস্টুনগুলো আমি নিজ দায়িত্বে সরিয়ে নিব।

ইউসিসি কোচিং সেন্টার ৩৫টি ফেস্টুন লাগিয়েছে শহরের বিভিন্ন স্থানে। রাজবাড়ী ইউসিসি কোচিং শাখার পরিচালক মেহেদী চিসতি বলেন, আমরা কলেজের সামনে ফেস্টুনগুলো লাগিয়েছি। আমরা শুধুমাত্র কলেজের সামনে এগুলো লাগিয়ে থাকি।

রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র আলমগীর শেখ তিতু বলেন, আমরা মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা করে ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করি। কিছুদিন পর কিছু নেতা আর ব্যবসায়ীরা আবার ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো শুরু করেন। দ্রুত আমরা কঠোর অবস্থানে যাব। কোনোভাবেই শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here