কামরুল হাসান, কলারোয়া(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি :: কলারোয়ায় দুর্বৃত্তের ছোড়া পেট্রোল বোমায় গুরুতর দগ্ধ হওয়া তানভীর আসাদ(১৩) আজ রোববার সকাল ৯ টার দিকে চিকিৎসারত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে মারা গেছে।
টানা ৩৮ দিন মৃত্যুর সাথে লড়ে অবশেষে ছোট ভাই তামিমের পথে যাত্রা করলো বড় ভাই তানভীর আসাদও।
উপজেলা কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবুল খায়ের এ মৃত্যুর খবর সাংবাদিকদের কাছে নিশ্চিত করেন।
সোমবার সকাল ৯ টায় লাঙ্গলঝাড়া কেএল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ময়দানে মরহুম তানভীর আসাদের নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
গত ৯ অক্টোবর রাতে গুরুতর অগ্নিদগ্ধ মা শাহানারা খাতুন ঝর্ণা (৩৫), বড় ছেলে সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া তানভীর আসাদ(১৩) ও ছোট ছেলে প্রথম শ্রেণি পড়ুয়া তামিম আজাদ(৬) কে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
সেখানে ৬ দিন মৃত্যুর সাথে লড়ে ১৪ অক্টোবর রাতে মারা যায় শিশু তামিম আজাদ। ছোট ভাই তামিম আজাদের মৃত্যুর ৩১ দিন পর বড় ভাই তানভীর আসাদও রোববার মারা গেলো।
তানভীর আসাদ কলারোয়া জিকেএমকে মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। তার শ্রেণি রোল নং ছিলো ৮। বর্তমানে মা শাহানারা খাতুন মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পেট্রোল বোমার আঘাত এতটাই মারাত্মক ছিলো যে ২ ভাইয়ের মৃত্যু অনিবার্য করে দিয়েছিলো।
ছোট ভাই তামিম চলে যাওয়ার এক মাস পরেই বড় ভাই আসাদকে একই পথ ধরতে হলো। একই পরিসরে বেড়ে ওঠা ২ ভাইয়ের একই পরিণতি হলো। দুর্বৃত্তদের টার্গেট সম্ভাবনাময় ২ ভাইকে সুন্দর এই পৃথিবী ছাড়তে বাধ্য করলো।
প্রসঙ্গত, গত ৮ অক্টোবর দিবাগত রাত ১ টার দিকে উপজেলার লাঙ্গলঝাড়া গ্রামে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও শেখ আমানুল্লহ ডিগ্রী কলেজের দর্শন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক খলিলুর রহমানের বাড়িতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হলে মা ও ২ ছেলে গুরুতর দগ্ধ হয়। এদের প্রত্যেকের শরীরের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ আগুনে ঝলসে যায়।
বর্বর এ ঘটনার নিন্দা ও দোষীদের প্রেপ্তারের দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন শিক্ষকসমাজসহ কলারোয়ার সর্বস্তরের মানুষ। তানভীর আসাদের মৃত্যুর খবর রোববার ছড়িয়ে পড়লে সবখানেই শোকের ছায়া নেমে আসে।