ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডেস্ক ::

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, যন্ত্র কখনোই মানব সভ্যতার নিয়ন্ত্রক হতে পারে না। ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব যান্ত্রিক’ এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মানুষ ও যন্ত্রের মিশেলে দরকার মানবিক শিল্প বিপ্লবের। ২০১৯ সালে জাপানে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামে উত্থাপিত জাপানের সোসাইটি ফাইভ পয়েন্ট জিরো বা পঞ্চম শিল্প বিপ্লব ধারণাটি বিশ্ববাসী গ্রহণ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় পৃথিবী আজ পঞ্চম শিল্প বিপ্লবে প্রবশ করেছে।’

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী  আজ শুক্রবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরস্থ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলার দ্বিতীয় দিনে ‘পঞ্চম শিল্প বিপ্লব ও ফাইভি-জি অবকাঠামো ঃ বাংলাদেশের প্রস্তুতি শীর্ষক এক আলোচনা  সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ তিন দিনব্যাপি এ মেলার আয়োজন করেছে।

এমটবের মহাসচিব  ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এ এস এম ফরহাদের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম।

অন্যান্যের মধ্যে ডাক  ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব-উল আলম, বিটিআরসি’র মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মনিরুজ্জামান জুয়েল, হুয়াওয়ের চিফ ট্যাকনিক্যাল অফিসার নিকি মা জিয়ান, মোবাইল অপারেটর কোম্পানি রবির প্রতনিধি শাহেদ আলম এবং ফাইভার এট হোমের চেয়ারম্যান  মইনুল হক সিদ্দিকী এ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

মন্ত্রী পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের পটভূমি বর্ণনা করে বলেন,  পঞ্চম শিল্প বিপ্লব ব্যাপকভাবে বিশ্বে আলোচিত বিষয়। তিনি বলেন, ‘আমরা পঞ্চম শিল্প বিপ্লব নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলছি। আমাদের একটি মানবিক সভ্যতা গড়ে তুলার বিকল্প নেই। যান্ত্রিক কোন শিল্প বিপ্লব হতে পারে না, তা হতে হবে মানবিক। আমরা বিপ্লব চাই। তার মানে হচ্ছে অতীতকে ভেঙ্গে দিয়ে নতুন কিছু তৈরি করা। আমাদেরকে প্রযুক্তির শেষ উদ্ভাবনে যেতে হবে এবং প্রযুক্তির উপর মানুষের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা কাজ করছি। ডিজিটাল বাংলাদেশের শক্তিশালী ভিত্তির উপর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট নাগরিক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের নেতৃত্বের জায়গার ক্ষেত্রে  যন্ত্রের উপর মানুষের সক্ষমতা থাকতে হবে। আমাদের নতুন প্রজন্ম অত্যন্ত মেধাবী। তাদেরকে পঞ্চম প্রযুক্তির যন্ত্র বানানোর দক্ষতা অর্জনে কাজ করতে হবে। তারা যন্ত্র বানাবে এবং যন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার যোগ্যতা অর্জন করবে।’ মানুষের সভ্যতা মানুষের হাতেই রাখতে হবে বলেও মন্ত্রী  উল্লেখ করেন।

দেশের প্রথম ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা মোস্তাফা জব্বার বলেন, ফাইভ জি অথবা পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের জন্য যে প্রযুক্তি চাইবো  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তা পড়াতে হবে। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে দক্ষতা দিতে না পারলে আমরা অভিষ্ট্য লক্ষ্য অর্জনে সফল হবো না’।

ডিজিটাল প্রযুক্তিতে  বাংলা ভাষার প্রবর্তক মোস্তাফা জব্বার বাংলাদেশের তরুণ উদ্ভাবকদের প্রশংসা করে বলেন, হুয়াওয়ের রোবট প্রযুক্তিতে বাংলাদেশি তরুণ প্রোগ্রামিং করছে। পাইপের ভিতর পড়ে যাওয়া শিশুটিকে রোবট দিয়ে উদ্ধারের প্রযুক্তি বগুড়ার এক তরুণ আবিস্কার করেছে। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির জন্য  বোর্ডের বইয়ের ডিজিটাল কনটেন্ট বিজয়  ডিজিটালের হাত ধরেই তৈরি হয়েছে। পঞ্চম শিল্প বিপ্লবে মেধাই হবে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সম্পদ।

মন্ত্রী উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম খুবই মেধাবি। তাদের যথাযথভাবে তৈরি করে কাজে লাগাতে পারলে আগামীদিনের বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর অনন্য দৃষ্টান্ত। মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক  মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা পঞ্চম শিল্প বিপ্লব যুগের দিকে যাচ্ছি। পঞ্চম শিল্প বিপ্লব হবে মানবিক। এখানে মানুষ ও যন্ত্র মিলে মিশে এক সাথে কাজ করবে এবং মানুষই যন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করবে।’

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here