পুলিশ ও র‌্যাব যৌথ অভিযান: আটক ১৫মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, নোয়াখালী প্রতিনিধি:: নোয়াখালীর হাতিয়ায় গত কয়েকদিনের রাজনৈতিক সহিংসতায় হতাহতের ঘটনার প্রেক্ষিতে সন্ত্রাসীদের  গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ ও র‌্যাব যৌথ অভিযানে নেমেছে। অভিযানের প্রথম দিন শনিবার রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়ে আটককৃতরা বিভিন্ন মামলার আসামী। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জটিত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

অভিযানস্থল থেকে নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একেএম জহিরুল ইসলাম জানান, অভিযানের মূল লক্ষ্য হচ্ছে গত কয়েদিনের হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িতদেরকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা। অভিযানে দুইজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, শতাধিক পুলিশ সদস্য ও অর্ধশতাধিক র‌্যাব সদস্য নিয়োজিত রয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

হাতিয়ায় আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরীন বিরোধের জেরে গত কয়েকদিনের সহিংস ঘটনায় যুবলীগ কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য আশ্রাফ উদ্দিন ও যুবলীগ কর্মী নুরুল আলম নিহত হন। এসব ঘটনায় গুলিব্ধি সহ অন্তত অর্ধশত লোক আহত হয়। এ সময় বেশকিছু বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীরা জানিয়েছে, গত ৩০ মার্চ হাতিয়ার আফাজিয়া বাজারে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চালের জন্যে ডিলারের গুদাম ঘেরাও করে হতদরিদ্র লোকজন। এর জেরে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাজারে এসে যুবলীগ নেতা আশ্রাফ উদ্দিন সহ দুইজনকে গুলিবিদ্ধ করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ৯ এপ্রিল মারা যান আশ্রাফ। নিহত আশ্রাফ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহম্মেদের ভাই ও হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের শরীরচর্চা শিক্ষক ছিলেন।

তার মৃত্যুর খবরে বিক্ষুদ্ধ লোকজন ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামীদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুর চালায়। এনিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর অনুসারী ও মহিউদ্দিন আহম্মেদের অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

১৩ এপ্রিল মোহাম্মদ আলীর অনুসারারীরা চরকিং ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ইউপি সদস্য মনির উদ্দিনের বাড়িতে গুলি করে হত্যা করে যুবলীগ কর্মী নুরুল আলমকে। এ সময় আরো তিনজনকে গুলি করে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। এরপর মহিউদ্দিন আহম্মেদের অনুসারীরা মোহাম্মদ আলীর অনুসারীদের বাড়িঘরে হামলা চালায়।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মজিদ জানান, যুবলীগ নেতা আশ্রাফ হত্যার ঘটনায় তার ভাই হাতিয়া পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ছাইফ উদ্দিন আহম্মেদের দায়ের করা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী ও চরঈশ^র ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রবীন্দ্র চন্দ্র দাস সহ ৮৭ জনকে আসামী করা হয়।

যুবলীগ কর্মী নুরুল আলম হত্যার ঘটনায় তার বাবা নূর হোসেনের দায়ের করা মামলায় মোহাম্মদ আলী সহ ১৬১ জনকে আসামী করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here