ডেস্ক রিপোর্ট::  রাঙামাটিতে চলমান অতি ভারী বর্ষণের ফলে পাহাড়ধসের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পাহাড়ধসের ফলে প্রাণহানী ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরের ৯টি ওয়ার্ডে মোট ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনাগ্রহী পাহাড়ের ঢালে বসবাসরত স্থানীয়রা।

শুক্রবার (৪ আগস্ট) বিকেল থেকে শনিবার (৫ আগস্ট) পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েক দফা মাইকিং করা হলেও আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখা যায়নি পাহাড়ের ঢালে বসবাসকারীদের। শনিবার রাত ৯টা থেকে পাহাড়ের ঢালে ঝুকিঁপূর্ণভাবে বসবাসরতদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী।

শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের শহীদ আব্দুল আলী একাডেমি, রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, শিশু একাডেমি, বি.এম ইন্সটিটিউট, বাংলাদেশ বেতার রাঙামাটি কেন্দ্র, লোকনাথ মন্দির আশ্রয়কেন্দ্রসহ বেশিরভাগ আশ্রয়কেন্দ্রেই এখনো তেমন কেউ আসেনি। শুক্রবার বিকেলে এবং শনিবার রাঙামাটি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ফায়ার সার্ভিস সহ প্রশাসনের একটি টিম শহরের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো পরিদর্শন করে পাহাড়ের ঢালে বসবাসরতদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করলেও সাড়া না মেলায় সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হচ্ছে।

শিমুলতলী সমাজ উন্নয়ন কমিটির সভাপতি আবু বক্কর লিটন (মিঠু) বলেন, আমাদের শিমুলতলীকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করে গতকাল বিকেলে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন করে গেছেন। যেহেতু বৃষ্টি হলেই পাহাড় ধসের আশঙ্কা থাকে তাই আমি শিমুলতলী এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনুরোধ করেছি। সন্ধ্যা পর্যন্ত অধিকাংশ লোকজনই আশ্রয়কেন্দ্রে যায়নি। রাত ৯টার পর থেকে সেনাবাহিনী এসে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের ইমার্জেন্সী রেসপন্স টিমের সদস্য মুন্না তালুকদার বলেন, গতকাল বিকেল থেকেই আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। কয়েক দফা মাইকিংও করা হয়েছে। তবুও আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত তেমন কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে আসেনি। কিছু এসেছিলেন তারা আবার চলে গেছেন। তাই রাত ৯টা থেকে আমরা সেনাবাহিনীর সহায়তায় লোকজনদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছি। আজ রাতে রুপনগর এলাকা থেকে ২০টি পরিবারকে বি.এম ইন্সটিটিউট আশ্রয়কেন্দ্রে এবং শিমুলতলীর প্রায় ১৫টি পরিবারকে বেতার রাঙামাটি কেন্দ্রের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এই বিষয়ে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য আমরা চেষ্টা করেছি। জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সদস্যরা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছেন। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে একজন লোকও যাতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে না থাকে সেজন্য সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়া হয়েছে। তাদের মাধ্যমে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হচ্ছে।

জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্যমতে রাঙামাটি জেলায় শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৭ মিলিমিটার এবং শনিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here