পরিবহন সেক্টর

রফিকুল আনোয়ার :: গতকাল দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সহপাঠী হারানো আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্ত হবার আহ্বান জানিয়ে ক্লাশে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। সড়কমন্ত্রীর এই অনুরোধের সাথে প্রতিশ্রুতি ছিল সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই শিক্ষার্থীদের জড়িতদের বিচার ও শাস্তির।

বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা এমন প্রতিশ্রুতি দুই বাসের প্রতিযোগিতা পড়ে কলেজ ছাত্রের হাত এবং কলেজ ছাত্রীর পা যখন চলে গিয়েছিল তখনও দিয়েছিলেন। কিন’ বন্ধ হয়েছে কি রাজধানীর সড়কের গাড়ি সমূহের প্রতিযোগিতা? না বন্ধ হয়নি। মন্ত্রীদের এমন বক্তব্যকে কেয়ার করার সময় নেই বাস চালকদের। কারণ এ বাস তো আবার যেন তেন লোকের নয়, ওমুক নেতা তমুক ভাইয়ের। আবার চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে মন্ত্রী শাহজাহান খানের আর্শিবাদপুষ্ট শ্রমিক নেতারা রাস্তায় নেমে যান।

এই মন্ত্রী শাহজাহান খান গতকাল সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদে কেন তিনি হেসে ছিলেন, তা ব্যাখ্যা দিতে আর হাসবেন না বলে ঘোষণা দিলেন হেসে হেসে। লিখলে হয়তো অনেক লেখা যাবে কিন’ তা না লিখে মাননীয় মন্ত্রীকে অনুরোধ করবো। আপনাদের আন্তরিকতার অভাব না থাকলেও পরিবহন সেক্টরে রাজনৈতিক বলয়ের কারণে সড়ক তার স্বকীয়তা হারিয়েছে।

বাংলাদেশের মতো বিশ্বের কোথায়ও সড়ক পরিবহন সেক্টরে এমন নৈরাজ্য নেই। মালিকদের আস্কারায় চালকের বেপরোয়ায় সহপাঠীর মৃত্যুর প্রতিবাদে স্কুল ছাত্ররা রাস্তায় নামলে তাদের পুলিশ নির্দয়ভাবে পেটাচ্ছে। এতে ক্ষুণ্ন হচ্ছে সরকারের ভাবমূর্তি। আবার অবরোধের কারণে জাতির নষ্ট হচ্ছে কয়েক ঘণ্টা সময়।

মাননীয় মন্ত্রী, জাতি আপনাদের কাছে ব্যতিক্রম কিছু আশা করে। গত ৬ মাসে রাজধানীতে পরিবহন সেক্টরের নৈরাজ্য সম্পর্কে আপনি আমার সাথে একমত হয়তো হবেন না, তবে এটা সত্যি যে, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন পরিবহন সেক্টরে তাদের কর্ত্বত বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। এ ব্যর্থতার দায়ভার কার? স্বাভাবিকভাবে বর্তাবে আপনার উপর। আমরা আপনাদের মতো জ্ঞানী না, তবে আপনারা যা বলেন এবং ভাবেন তাকে আমরা শ্রদ্ধা করি।

পাশাপাশি আমাদেরও কিছু পরামর্শ আছে যা আপনাদের নজরে আনতে চাই। আমি মনে করি, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত পরিবহন সেক্টরকে নৈরাজ্যমুক্ত এবং সড়কের শৃঙ্খলা ফিরেয়ে আনতে পরিবহন সেক্টরকে এক বছরের জন্য সেনাবাহিনীর হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত। এতে বিআরটিএ কর্তৃক অর্পিত সকল নিয়মকানুন পরিবহন মালিক শ্রমিক সকলে শিখে যাবে তাড়াতাড়ি। এতে লাভবান হবে সরকার, যার সুফল ভোগ করবে জাতি। কারণ বাঙালি একবার যা শিখে তা ভুলে না।

 

লেখক: সম্পাদক, দৈনিক নোয়াখালী প্রতিদিন, ইমেইল: noakhalipratidin@gmail.com

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here