মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল,  নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ নোয়াখালী সদর উপজেলার নোয়াখালী ইউনিয়ন থেকে বিবি মরিয়ম (২৬) ও তার আড়াই বছরের শিশু কন্যা সানজিদা আক্তারের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে নিহত মরিয়মের স্বামী আকবর আলী বাবর (২৮) পলাতক রয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ৯৩শল্লা গ্রামের কাজিরটেক এলাকা থেকে লাশ দু’টি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা হচ্ছেন ওই এলাকার আকবর আলীর স্ত্রী বিবি মরিয়ম ও তার মেয়ে সানজিদা আক্তার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৮-৯বছর আগে জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের গাংচিল এলাকার আবুল কাশেমের মেয়ে মরিয়মের সাথে শল্লা গ্রামের সোলাইমানের ছেলে আকবর আলী বাবারের সাথে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে সুজন (৬), সোহান (৪) নামের দুই ছেলে ও সানজিদা নামের এক মেয়ে ছিল। বাবর পেশা কৃষক ছিল। স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও মাকে নিয়ে একসাথে থাকতো বাবর। ঈদের আগে তার ছোট ভাই ঢাকা থেকে বাড়ীতে এসে বাবরের পরিবারের সাথে ছিল। সকাল থেকে বাবর, তার ভাই ও মা পলাতক রয়েছে।
নিহত মরিয়মের ভাই মো. আব্দুল করিম অভিযোগ করে বলেন, সানজিদা জন্ম নেওয়ার দুই মাস আগে মরিয়ম বাবার বাড়ীতে ছিল। এ সুযোগে বাবর তাদের পাশ্ববর্তী এক স্কুল ছাত্রীর সাথে পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। এনিয়ে এলাকায় একটি শালিস হলেও ওই মেয়ের সাথে সম্পর্ক ছাড়েনি বাবার। এনিয়ে মরিয়ম কিছু বলতে গেলে বাচ্চাদের সামনে তাকে শারিরিক নির্যাতন করতো বাবার। এছাড়াও কারনে-অকারনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মরিয়মকে প্রায় মারধর করত বাবর। বৃহস্পতিবার রাতের কোন একসময় বাবর তার পরিবারের লোকজনের সহযোগিতায় মরিয়ম ও সানজিদাকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে। পরে মরিয়মের লাশ পুকুরের পাশের একটি কুল (বরোই) গাছের সাথে ঝুলিয়ে ও সানজিদার লাশ পুকুরে রেখে পালিয়ে গেছে। অপর দুই ছেলে বাড়ীতে আছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) আবদুল্যাহ বলেন, পাশ্ববর্তী এক স্কুল ছাত্রীর সাথে বাবরের পরকিয়া সম্পর্ক ছিল বলে স্থানীয় যুবকরা জানিয়েছে। গত কয়েক মাস আগে এলাকার কয়েকজন যুবক বাবরকে আটক করে কিছু টাকা নিয়েছে বলে শুনেছি। তবে বিষয়টি নিয়ে বসার জন্য উভয় পক্ষকে বললেও তারা কেউ তাতে সাড়া দেয়নি।
ঘটনাস্থল থেকে সুধারাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাউসার জানান, অর্ধনগ্ন অবস্থায় গৃহবধু মরিয়মের লাশ নিজ বাড়ীর পাশের পুকুর পাড়ে একটি গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত ছিল। তার শরীর পানিতেও ভেজা ছিল। একই পুকুরে ভাসমান ছিল তার শিশু কন্যার লাশ।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নবীর হোসেন জানান, লাশগুলো উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে নিহত গৃহবধূর স্বামী বাবর পলাতক রয়েছে। ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্ত বাবরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here