মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, নোয়াখালী প্রতিনিধি ::
নোয়াখালীতে চুরির পর এক গৃহবধূকে (৩৫) ধর্ষণ করে হত্যার ঘটনায় দুই চোরকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়োন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় পুলিশ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছোরা, চোরাইকৃত এক জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, এক জোড়া রুপার পায়ের নুপুর ও ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের চর নলুয়া গ্রামের মো.জাকের হোসেনের ছেলে মো.জাহাঙ্গীর আলম (২৮) ও একই গ্রামের মো.নুরউদ্দিন ওরফে বিটুর ছেলে মো.নিজাম উদ্দিন শান্ত (২৫)।
গতকাল মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আসামিদের বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।  এর আগে, দুই আসামি দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এসএম মোসলেহ্ উদ্দিনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।  তিনি বলেন, ভিকটিমের স্বামী (৩৫) কবিরহাট উপজেলার রামেরশ্বরপুর গ্রামের একটি নার্সারিতে চাকরি করেন। সেই সুবাধে তিনি সেখানে থাকেন। গত বছরের ১১ ডিসেম্বর ভিকটিম রাতে বাড়িতে একা ঘুমিয়ে ছিলেন। আসামিরা পূর্বপরিকল্পিত ভাবে তার বসত ঘরের সিঁধ কেটে প্রবেশ করে। দুই আসামি পেশায় রিকশা চালক ও তারা পরস্পর বন্ধু ছিল। আসামি নিজাম উদ্দিন শান্ত এর বাড়ি এবং ভিকটিম নাজমুন নাহারের বাড়ির কাছাকাছি। ভিকটিম বিষয়টি টের পেলে তারা ছোরার ভয় দেখিয়ে ভিকটিমকে কাবু করে এবং ঘরের ভিতরে তল্লাশী করে ভিকটিমের মোবাইল ফোন, স্বর্ণের এক জোড়া কানের দুল, এক টি নাকের ফুল এবং রুপার এক জোড়া পায়ের নুপুর কেড়ে নেয়। একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর ভিকটিমকে জোরপূবর্ক ধর্ষণ করে এবং আসামি শান্ত ভিকটিমের মোবইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। ভিকটিম তাদরকে চিনে ফেলায় আসামিরা ভিকটিমের হাত-পা বেধে গলায় চুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
ওসি আরো বলেন, পরের দিন সকাল ৭টার দিকে স্থানীয় লোকজন গুরুত্বর আহত অবস্থায় ভিকটিমকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী সুধারাম মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে গত ১৯ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অস্থায় ভিকটিম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায় ।
মামলাটি গত ৩০ ডিসেম্বর জেলা গোয়েন্দা শাখাতে তদন্তের জন্য হস্তান্তর হওয়ার পর (ডিবি) টিম চাঞ্চল্যকর রহ্যসজনক হত্যার বিষয়টি উদঘাটনে মাঠে নামেন।  গত সোমবার ১৩ ফেব্রুয়ারি চাঞ্চল্যকর ক্লু-লেস হত্যা মামলার আসামিদের তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নোয়াখালী ও কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here