বাংলাদেশে বিদায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদা বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব, তবে সেজন্যে আরো কিছু ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন৻
মেয়াদ শেষ হওয়ার একদিন আগে বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ টি এম শামসুল হুদা বলেছেন, তাদের কাজগুলো এগিয়ে নেওয়া হলে নির্বাচন ভালো না হওয়ার কোনো কারণ নেই৻
তবে তিনি বলছেন যে, এক্ষেত্রে বিরোধী দলের আস্থা অর্জনের বিষয়টিও অত্যন্তু জরুরী৻
আগামী সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে এক দিনে ভোট গ্রহণের পরিবর্তে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দিনে ভোট গ্রহণের ওপর তিনি এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছেন৻
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রায় এক-দেড় মাস সময় নিয়ে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে৻ এতে নির্বাচনের পরিবেশ বজায় রাখা গেছে৻ এভাবে নির্বাচন করা হলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকে৻ নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণও ভালো থাকে৻
জাতীয় নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহারের ওপরও গুরুত্ব দিচ্ছেন নির্বাচন কমিশনের বিদায়ী প্রধান৻
তিনি বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের অভিজ্ঞতা থেকে তাঁরা দেখছেন, এতে ভোট কারচুপির অনেক সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব৻
“ইভিএম ব্যবহার করলে ভোট বাতিল হওয়ার কোন আশংকা নেই, গণনাতেও ভুল হওয়ার সম্ভাবনা নেই৻ আর এখানে ব্যালট পেপার ছিনতাই করারও কোন সুযোগ নেই৻
মিস্টার হুদা জানান, তারা এসব প্রস্তাব ইতোমধ্যে সরকারের কাছে পাঠিয়েছেন৻ তাঁরা আশা করছেন, সরকার এবং পরবর্তী নির্বাচন কমিশন এসব বিষয় বিবেচনায় নেবেন৻
বর্তমান সরকারের আমলে যেসব নির্বাচন তারা করেছেন, তার অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে এটিএম শামসুল হুদা বলেন, প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রীদের পর্যায় থেকে তাদের কখনো সেরকম কোন চাপের মুখে পড়তে হয়নি৻ কিন্তু স্থানীয় নির্বাচনের সময় অনেক জায়গাতেই সংসদ সদস্যরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা থানা নির্বাহী অফিসারের ওপর গিয়ে চড়াও হয়েছেন৻
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের সময় এই সমস্যা আরও জটিল রূপ নিতে পারে, কারণ তখন এই এমপিদের অনেকে নিজেরাই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন৻
মিস্টার হুদা বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশনের সামনে সবচেয়ে জরুরী চ্যালেঞ্জ হবে সব দলের আস্থা অর্জন করা৻
তিনি বলেন, বিরোধী দল যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না বলে অনড় থাকে, সেখানে তো কিছু করার নেই৻ কিন্তু রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়, এটা তিনি মনে করেন না৻ তবে বিরোধী দলের আপত্তির মুখে সেটা করা কঠিন হবে৻
এটিএম শামসুল হুদা বলেন, বিরোধী দলের এই অনাস্থা কিছুটা হলেও প্রশমনের জন্যই নির্বাচন কমিশনে কিছু আইনী সংস্কার প্রয়োজন, যাতে করে নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা যায়৻
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/স্টাপ রিপোর্টার