ইউনাইটেডনিউজটোয়েন্টিোর.কম
গোলাম মোস্তাফিজার রহমান মিলন
হিলি : দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলের ভাটা গুলোতে দেখা দিয়েছে তীব্র কয়লা সংকট। ভাটা গুলোতে পোড়ানোর অপেক্ষায় পড়ে আছে লাখ-লাখ ইট। আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ভাটা মালিকরা। বড়পুকুরিয়া কয়লা ক্ষনি কর্তৃপক্ষ কয়লা বিক্রি বন্ধ রাখায় এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। এঅবস্থায় আগামিতে ইটের সংকট দেখা দেবে, সেই সাথে দামও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছেন তারা।
জেলার বিভিন্ন ইট ভাটা ঘুরে দেখাগেছে, জ্বালানি কয়লার অভাবে বিভিন্ন ভাটাগুলোতে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে হাজার-হাজার কাঁচা ইট। ভাটা মালিকরা বলনে, গত একমাস আগে ইট পোড়ানো মওসুম শুরু হলেও শুধু মাত্র কয়লার অভাবে ইট গুলো পোড়ানোর অপেক্ষায় এভাবেই পড়ে আছে। তারা জানান, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষ খোলা বাজারে কয়লা বিক্রি বন্ধ রেখেছেন। আর সৃষ্টি হয়েছে অচলবস্থা। ওদিকে ভারত থেকে আমদানিকৃত কয়লা তিনগুন বেশী দামে কিনে পরতা পড়ছেনা ভাটা মালিকদের। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।
এদিকে ইট ভাটা গুলোতে কয়লার সংকট দেখা দেওয়ায় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রতিদিন বিপুল পরিমান কয়লা আমদানী হচ্ছে। আর এসব কয়লা আমদানী হচ্ছে প্রতি মেট্রিক টন ৮০ মার্কিন ডলারে যা বংলাদেশী টাকায় প্রায় প্রতিটন ৬ হাজার ২২৮ টাকায়। অথচ আমদানী হওয়া এসব কয়লা হিলি স্থলবন্দরে বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ১৯ হাজার টাকা দরে। আমদানীকৃত মূল্যের প্রায় তিন গুন দামে।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হিলি স্থলবন্দরে কয়লা কিনতে আসা ভাটা মালিকদের অভিযোগ, আমদানী হওয়া কয়লা গুলোর গুণগত মান নিম্ন হলেও এসব কয়লা কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। গেলো বছর ভাটা মালিকরা বড়পুকুরিয়ার থেকে কয়লা প্রতিটন ৯ হাজার ২০০টাকায় কিনলেও এবার ভারত থেকে আমদানী করা এসব কয়লা কিনতে হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা দরে।
দিনাজপুর ১০ মাইল থেকে কয়লা কিনতে আসা কামরুল হাসান জানালেন, ভারত থেকে যেসব কয়লা আমদানী হচ্ছে তাতে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পাথর মিশানো রয়েছে। আমদানী হওয়া কয়লা বড়পুকুরিয়ার কয়লার চেয়ে নিম্ন মানের। কিন্তু কোন উপায় নাপেয়ে বাধ্য হয়েই এসব কয়লা কিনতে হচ্ছে তাদেক।
ইদ্রিস আলী জানালেন, ভাটায় যেহেতু আগুন দেওয়া শুরু হয়েছে এঅবস্থায় ভাটার আগুন আর নিভানো সম্ভব নয়। একবার আগুন নিভেগেলে লাখ টাকার ক্ষতি হবে। তাই বাধ্য হয়েই বেশী দামে কয়লা কিনতে হচ্ছে। এছাড়াও অন্যান্য বন্দর দিয়ে কয়লা আমদানী বন্ধ রয়েছে তাই হিলিতে বেশী দামে কিনতে হচ্ছে তাদেরকে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আগামিতে দেশে ইটের সংকট দেখা দিতে পারে। সেই সাথে ইটের দামও প্রতি পিচে ২-১টাকা বেড়ে যেতে পারে।
রিয়াজুল ইসলাম জানান, ভারত থেকে যে কয়লা আমদানী হচ্ছে এই কয়লাকে বলা হয় বর্জ কয়লা। এটা পাথর মিশানো। এর পর দামও বেশী।
হিলি স্থল শুল্ক ষ্টেশনের সহকারী কমিশনার মুহিববুর রহমান ভূঞা জানান, তাদের হিসেব মতে গত এক মাসে ভারত থেকে প্রায় সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন কয়লা আমদানী হয়েছে। দেশের অন্যান্য বন্দর গুলো দিয়ে কয়লা আমদানী বন্ধ থাকায় এই স্থলবন্দর দিয়ে আমদানী আগের তুলোনায় অনেক গুন বেড়েছে। ভারত থেকে প্রতি মেট্রিক টন কয়লা আমদানী হচ্ছে ৮০ মার্কিন ডলার দামে। গত আর এর সাথে ভ্যট রয়েছে ১৫ শতাংশ।