ক্রাইস্টচার্চের দুই মসজিদে বন্দুকধারীর নজিরবিহীন হামলায় হতাহতের ঘটনার পর নিউজিল্যান্ড সরকার সংশোধিত নতুন অস্ত্র আইনের অধীনে সব ধরনের মিলিটারি টাইপ সেমি-অটোমেটিক ও অ্যাসল্ট রাইফেল নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে।

ঘটনার ছয় দিনের মাথায় আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন বলেন, আগামী ১১ এপ্রিল এ-সংক্রান্ত নতুন আইন উপস্থাপন করা হবে। নিষিদ্ধ করা এসব অস্ত্র কিনে নেওয়ার জন্য সরকার একটি প্রকল্পও হাতে নেবে বলে জানান তিনি।

জেসিন্ডা আরডার্ন বলেন, ‘ভয়াবহতম এই ঘটনার ছয় দিনের মাথায় আমরা মিলিটারি টাইপ সব ধরনের সেমি-অটোমেটিক (আধা-স্বয়ংক্রিয়) (এমএসএসএ) ও অ্যাসল্ট রাইফেল নিউজিল্যান্ডে নিষিদ্ধ ঘোষণা করছি।’

উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ম্যাগাজিন এবং বন্দুককে স্বয়ংক্রিয়ে রূপান্তর করতে সহায়তা করে এমন উপাদানও নিষিদ্ধের কথা জানান নিউজিল্যান্ডের সরকারপ্রধান।

মার্কিন বার্তা সংস্থা থমসন রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় বন্দুকধারী এক ব্যক্তি ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদসহ কাছের আরেকটি মসজিদে হামলা চালায়। এতে পাঁচ বাংলাদেশিসহ ৫০ ব্যক্তি নিহত হন। পরে সে পুলিশের কাছে ধরা পড়ে।

ওই ব্যক্তি হামলার সময় মোট পাঁচটি অস্ত্র ব্যবহার করে। তার মধ্যে দুটি আধা-স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ও দুটি শটগান। এসব অস্ত্র সে অনলাইনে কিনেছিল। ঘটনার পর পরই সরকারের পক্ষ থেকে অস্ত্র আইন পরিবর্তনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদ অস্ত্র আইন পরিবর্তনের ব্যাপারে ‘নীতিগতভাবে সম্মত’ হয়।

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আরো বলেছেন, ‘সরকারিভাবে জানানো হয়েছে, এসব নিষিদ্ধ অস্ত্র ক্রয়ের জন্য আমাদের ১০০ থেকে ২০০ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত ব্যয় হবে। কিন্তু এই দাম দিয়ে হলেও আমরা আমাদের কমিউনিটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।’

ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি পুলিশের বরাত দিয়ে বলেছে, এ ঘটনার হামলাকারীর নাম ব্রেন্টন ট্যারান্ট। অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ব্রেন্টন নিজেকে একজন সাধারণ শ্বেতাঙ্গ হিসেবে পরিচয় দেয়। মূলত শ্বেতাঙ্গদের ভূখণ্ড কখনোই অনুপ্রবেশকারীদের হবে না, এটা বুঝিয়ে দিতেই ওই হামলা চালানো হয় বলে ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

এরই মধ্যে ব্রেন্টনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আদালত ব্রেন্টন ট্যারান্টের জামিনবিহীন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এতে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশ ব্রেন্টনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। ওই দিন তাকে সাউথ আইল্যান্ড সিটি হাইকোর্টে তোলা হবে।

ঘটনার পর পরই প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন অস্ত্র আইন পরিবর্তনের ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এ ধরনের ভয়াবহ ঘটনার পর তিনি স্বয়ংক্রিয় (অ্যাটোমেটিক) অস্ত্র নিষিদ্ধের পক্ষে বলে জানান।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here