নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন বৃহস্পতিবার। প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন।

প্রস্তুত নারায়ণগঞ্জ। আর দেশবাসীর দৃষ্টিও তাই নারায়ণগঞ্জে। নির্বাচন ঘিরে কিছুটা উত্তেজনা থাকলেও সর্বত্র নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে রয়েছেন বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশের সদস্যরা। থাকবে চার স্তরের নিরাপত্তাবলয়। কেউ ভোট কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে গুলি চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থায় আজ বুধবার দুপুরের পর থেকে ভোট কেন্দ্রগুলোয় ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সামগ্রী পাঠানো হবে। সন্ধ্যার মধ্যে প্রতিটি ক্যাম্পে হাজির থাকবেন আনসার ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার নির্বাচন চলাকালে প্রতি কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা নুরুজ্জামান তালুকদার।

তিনি জানান, পুলিশ, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), আনসার, বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্য, প্রিসাইডিং অফিসারসহ প্রায় ৯৫০ জন জনবল থাকছে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন সম্পন্ন করতে। এই নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জজুড়ে এখন উৎসবের আমেজ। গত মধ্যরাত পর্যন্ত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারণায় উত্তাল ছিল এই বন্দরনগরী। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ঘাম ঝরিয়েছেন দুই হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভী ও বিএনপি সাখাওয়াত হোসেন খান। এরই মধ্যে সোমবার মধ্যরাত থেকে বহিরাগতরা নারায়ণগঞ্জ ছেড়েছেন। গত মধ্যরাত থেকে সব ধরনের প্রচারণা নিষিদ্ধ। ভোটযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত নারায়ণগঞ্জ। কার ভাগ্যে আছে শেষ হাসি— এখন কেবলই দেখার অপেক্ষা। ভোটের দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জে। আজ মধ্যরাত থেকে আগামীকাল মধ্যরাত পর্যন্ত নৌযান, স্থলযান, বেবিট্যাক্সি, অটোরিকশা, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক, টেম্পো, ইজিবাইকসহ সব যানবাহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে সেখানে। এ ছাড়া সোমবার থেকেই মোটরসাইকেল চলাচলে চলছে নিষেধাজ্ঞা। তবে নির্বাচনে প্রার্থী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, অনুমতিপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক, সাংবাদিকসহ নির্বাচনী এজেন্টদের জন্য এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। একইভাবে জাতীয় মহাসড়কেও এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না। মহিলা, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক ভোটারদের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ছিল। তারা মিছিল-শোডাউন করেছেন। অনেকের বিরুদ্ধে কালো টাকা ছড়ানোর অভিযোগও ছিল। কয়েকজনকে জরিমানাও করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটের দিন কাউন্সিলরদের নিয়েই উত্তপ্ত পরিবেশ বিরাজ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে ২৭টি সাধারণ ও ৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে। মোট ভোটার ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৭৩৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪১ হাজার ৬৭৫ আর নারী ২ লাখ ৩৬ হাজার ৬৪ জন। কেন্দ্র ১৭৪টি। নির্বাচনে মেয়র পদে ৭, সাধারণ কাউন্সিলর ১৫৬ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here