রাত ১২টা বেজে ৩৫ মিনিটে বিকট শব্দে বোমাটি নিষ্ক্রিয় হয়। এর আগে বেলা ২টার দিকে র্যাব-৫ (রাজশাহী) এর বোমা ডিসপোজাল ইউনিট এসে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বোমা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন। তবে তাঁদের কাছে বোমাটি শক্তিশালী হওয়ায় নিষ্ক্রিয় করারমত যন্ত্রপাতি না থাকায় পুলিশ হেডকোয়ার্টারে খবর দিলে রাত সাড়ে দশটার সময় ডিএমপির একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে বোমা নিষ্ক্রিয় কার্যক্রম শুরু করে।
থানাপুলিশ, কলেজ কর্তৃপক্ষ ও র্যাবের সুত্রে জানাগেছে, গুরুদাসপুর পৌরশহরের ‘ সরকারি বঙ্গবন্ধু টেকনিক্যাল বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটে’র অধ্যক্ষের অফিস কক্ষের দরজাঘেঁষে কে বা কারা প্লাষ্টিকের বস্তায় মোড়ানো একটি ল্যাগেজ রেখে যান। ওপরে লেখা ‘ প্রিন্সিপাল বঙ্গবন্ধু কলেজ, গুরুদাসপুর- আম্রপালি ৩০ কেজি’। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলাম সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কলেজে এসেএকটি পার্সেল দেখতে পান। অফিস কক্ষের দরজা ঘেঁসে কাটুনে বিশেষবার্তা লেখা থাকায় সন্দেহ হলে থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
সকাল ৯টা থেকে কলেজে পুলিশ মোতায়েন করে র্যাবের বোমা ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর পাঠানো হয়। পরে বেলা ২টার দিকে র্যাবের বোমা ডিসপোজাল ইউনিট এসে তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সেখানে বোমা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে চলে যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বোমা রাখার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় ভীতি সৃষ্টি হয়স্থানীয়দের মধ্যে।
ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক মোঃ শফিউদ্দিন শেখ জানান,‘প্রাথমিক ভাবে এটি একটি শক্তিশালী বোমা ছিলো। যে বোমা নিয়ন্ত্রন যন্ত্রের সাহায্যে এটি নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। একটি সুটকেচের ভেতরে এই বোমা রাখা হয়েছিলো। যার মধ্যে ছিলো, ককটেল জাতীয় বস্তু তিনটা, পেট্রোল বোমার তিনটা বোতল এবং প্লাস্টিকের বয়ামের মধ্যে কেমিক্যাল জাতীয় পদার্থ ছিলো। টানা আড়াই ঘন্টার চেষ্টার পর বোমাটি নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।’
সিংড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আক্তারুজ্জামান ও গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ারুজ্জামান বলেন,‘ অধ্যক্ষের ফোন পেয়ে সেখানে সকাল থেকেই পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিলো। সন্দেহের কারনে প্যাকেটটি খুলতে র্যাবকে খবর পাঠানো হলে বেলা ২টার দিকে র্যাবের বোমা ডিসপোজাল ইউনিট এসে তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সেখানে বোমা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে চলে যায়। পরে রাত সাড়ে দশটায় ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট বোমাটি নিষ্ক্রিয় করার কার্যক্রম শুরু করে। রাত সাড়ে বারোটার দিকে বোমাটি নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। কলেজে পার্সেলের ভেতরে বোমা কে রেখেছে সে বিষয়ে গুরুত্বসহকারে ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলাম বলেন, কলেজটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটি পক্ষের সাথে মামলা মোকদ্দমা চলছে। এই বিরোধের জের ধরে সম্প্রতি প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁকে ও কলেজটি উড়িয়ে দেওয়ার হুমকী দিয়েছিলেন। এই বিরোধ থেকে প্রতিপক্ষ তাঁর অফিস কক্ষের সামনে বোমা পেতে রাখতে পারেন বলে তিনি সন্দেহ করছেন।