নদীর তীর রক্ষা বাঁধের দাবিতে কমলনগরে তিনদিন ব্যাপি বিক্ষোভ

জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :: লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মেঘনা নদীর ভাঙন প্রতিরোধ ও তীর রক্ষা বাঁধের দাবিতে তিনদিন ব্যাপি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত উপজেলার পাটারিরহাট, লুধূয়া বাজারে ও চর লরেন্স বাজারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। তিন দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচির শেষ দিন ছিল রবিবার।

উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি দেয় ‘কমলনগর রামগতি বাঁচাও মঞ্চ’।

রবিবার দুপুরে কমলনগরের হাজিরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন বিপুল সংখ্যক জনতা। সংগঠনটি তিন দিন ব্যাপি দুই উপজেলার স্থানীয় বিভিন্ন বাজারে ৬টি বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করে।

বিক্ষোভ মিছিলে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মতলব, কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হোসেন আহমেদ, অ্যাডভোকেট ফখরুল আলম নাহিদ, সমাজসেবক আবুল কাশেম মাস্টার, ব্যাংকার নুর মোহাম্মদ, অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার পালোয়ান, রাকিব হোসেন ও দিদার হোসেন প্রমূখ।

এ সময় বক্তরা সরকারের কাছে দ্রুত নদী বাঁধসহ বর্ষার আগে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে ভাঙনের ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনার দাবি জানান।

এর আগেও বিভিন্ন সময় কমলনগর নদীভাঙন প্রতিরোধ কমিটি, কমলনগর সুরক্ষা ফোরামসহ বিভিন্ন সংগঠন ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে মানববন্ধন, প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান ও সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।

পরবর্তীতে মেঘনা নদীভাঙন রোধে রামগতি ও কমলনগর এলাকায় বাঁধ নির্মাণে এক ৩৫০ কোটি টাকা অনুমোদন করে একনেক। ২০১৪ সালের ৫ আগস্ট প্রথম পর্যায়ে ১৯৮ কোটি টাকার প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রথম পর্যায়ের বরাদ্দকৃত টাকায় রামগতিতে এক কিলোমিটার, আলেকজান্ডারে সাড়ে তিন কিলোমিটার ও কমলনগরে এক কিলোমিটার বাঁধ বাস্তবায়ন করা হয়। কিন’ কমলনগর রক্ষায় মাত্র ১ কিলোমিটার বাঁধ যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন অন্তত আরও ৮ কিলোমিটার।

সম্প্রতি পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার মেঘনা নদীভাঙন কবলিত মাতাব্বরহাট এলাকা পরিদর্শনে আসেন।

এ সময় তিনি পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, কমলনগরকে আর ভাঙতে দেওয়া যাবে না, ভাঙন থেকে রক্ষা করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কমলনগরে ৬০০ মিটার ও রামগতিতে ৭০০ মিটার বাঁধের কাজ করা হবে। এছাড়াও নদী তীর রক্ষায় আরও ১৫ কিলোমিটার কাজ বাস্তবায়নে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হবে ।

দীর্ঘ তিন যুগের বেশি সময় ধরে কমলনগরে মেঘনা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাট, হাজার-হাজার একর ফসলি জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আশ্রয়কেন্দ্রসহ বহু স্থাপনা। হুমকির মুখে রয়েছে কমলনগর উপজেলা কমপ্লেক্সসহ সরকারি বেসরকারি বহু প্রতিষ্ঠান।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here