ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডেস্ক ::
টেকসই ভবিষ্যত বিনির্মাণ ও নতুন বিশ্ব গড়ে তুলতে গ্লোবাল সাউথ এর কৌশলের কেন্দ্রবিন্দুতে তরুণ ও ছাত্রদের রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন,তরুণরা নতুন বিশ্ব গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি গ্লোবাল সাউথ নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্য বলেন,‘আমাদের কৌশলগুলোর কেন্দ্রবিন্দুতে অবশ্যই তরুণ এবং ছাত্রদের রাখতে হবে, যারা গ্লোবাল সাউথের জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশ। আমাদের জনসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ তরুণ এবং তারা সমাজের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশ।’
শনিবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ‘থার্ড ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিট-২০২৪’ এর ইনঅগারাল লিডার্স অধিবেশনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস একথা বলেন। তিনি ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি সম্মেলনে যুক্ত হন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে শপথ নেয়ার পর এটিই ড. ইউনূসের প্রথম বহুপক্ষীয় কোন অনুষ্ঠানে যোগদান।
আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা, এশিয়া ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দেশ গ্লোবাল সাউথের অন্তর্ভুক্ত। মূলত এসব দেশে মাথাপিছু আয় উন্নত দেশের তুলনায় কম।
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের তরুণদের প্রশংসা করে বলেন, ‘বীর ছাত্রদের নেতৃত্বে বাংলাদেশে গত ৫ আগস্ট দ্বিতীয় বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে। আর জনগণের যোগদানের মাধ্যমে এই বিপ্লব গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। যার ফলস্বরূপ গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপদ গ্রহণ করে।’
উল্লেখ্য, ছাত্রজনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে এবং এর মাধ্যমে তার ১৫ বছরের দীর্ঘ শাসনের অবসান হয়।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আপনাদের দ্রুত ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। নয়তো গুরুত্বপূর্ণ কিছু মিস করতে পারেন। ঢাকার অনেকটা অংশ পরিণত হয়েছে বিশ্বের গ্রাফিতি রাজধানীতে। তরুণ শিক্ষার্থী ও ১২ থেকে ১৩ বছর বয়সী শিশুরা ৪০০ বছরের পুরোনো এই শহরের দেওয়ালে নতুন গণতান্ত্রিক পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশের চিত্র দিয়ে রাঙিয়ে তুলছে। এজন্য কোনো কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা বা দিকনির্দেশনা নেই। কারও কাছ থেকে বাজেট সাপোর্ট পায়নি তারা। এটা দ্বিতীয় বিপ্লবের লক্ষ্যের প্রতি তাদের আবেগ ও অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ মাত্র। তারা রং এবং ব্রাশ কেনার জন্য দোকানে যান। তারা তাদের নিজস্ব বিষয় এবং নিজস্ব বার্তা তৈরি করে। তারা যে বার্তা আঁকছে তা যে কাউকে শিহরিত করবে। তরুণদের স্বপ্ন সত্যি করাই আমাদের কাজ।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বৈপ্লবিক পরিবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে তরুণরা আন্দোলন করেছে এবং তাদের আকাক্ষা দেশবাসীকে প্রভাবিত করেছে। এখন গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে অর্থবহ সংস্কার জরুরি। যার মাধ্যমে ভঙ্গুর হয়ে পড়া রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে পুনরুদ্ধার করা হবে। তারা সব অসম্ভব সম্ভব করতে পারে। তারা উদ্যোক্তা। তারা যে চাকরি চায়, সেটা উপভোগ করার কারণে নয়। বরং তারা অন্য কিছু করতে পারছে না তাই। কারণ আমাদের সব দেশের শিক্ষাব্যবস্থা তাদের চাকরির জন্য প্রস্তুত করে।
তিনি বলেন,বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বহুত্ববাদী গণতন্ত্রে উত্তরণ এবং একটি পরিবেশ তৈরি করতে প্রতিশ্রতিবদ্ধ। যার মাধ্যমে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।