নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দর বারি দুলু (৪০) নামের এক হাজতীর মৃত্যু হয়েছে। স্বজনদের অভিযোগ চিকিৎসা অবহেলার কারনেই তার মৃত্যু হয়েছে। মৃত হাজতী নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার কান্দামিস্ত্রি পাড়ার মৃত লাহর উদ্দীনের ছেলে। নিহতের লাশ শুক্রবার বিকাল ৩ টার দিকে ময়না তদন্তশেষে নিহতের পরিবারের কাছে হসত্মানত্মর করা হয়েছে।
জেলখানা ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বুধবার জেলার বদলগাছী থানা থেকে নওগাঁ জেলা কারাগারে মেডিক্যাল সার্টিফিকেটসহ পাঠানো হয় এবং জেলা কারাগার হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছিল। অবস্থার অবনতি হলে বৃহষ্পতিবার সকালে তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহষ্পতিবার রাতে হাজতী আব্দুর বারি মারা যায় বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়।
হাসপাতালে সাংবাদিকদের পেয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অভিভাবকরা জানান, নওগাঁ সদর হাসপাতালে প্রায় চিকিৎসা অবহেলার কারনে এই ধরনের অপমৃত্যুর মত ঘটনা ঘটে থাকে। এখানে ডাক্তারদের সঠিক সময়ে পাওয়া যায় না। সেবিকারা চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সাথে অমানবিক আচরন করে থাকে।
নিহতের স্ত্রী আফরোজা সাংবাদিকদের দেখতে পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরে এবং আহাজারি করতে থাকে যে চিকিৎসা অবহেলার কারনেই তার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। সদর হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর ডাক্তারের অবহেলা কর্তব্যরত সেবিকার দায়িত্বহীনতার কারনেই এই অপমৃত্যু হয়েছে।
চিকিৎসার সময় সাথে থাকা মৃতের ভাগ্না মো: রায়হান জানান, তার মামাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর এই তীব্র শীতে পর্যাপ্ত শীত বস্ত্র দেয়া হয়নি, রোগীর রোগ নির্ণয় না করেই চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তাকে ইনজেকশন করার মত কোন সিরেঞ্জ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দিতে পারেনি। পরে বাহির থেকে কিনে আনার পর ইনজেকশন পুস করার জন্য কর্তব্যরত কোন সেবিকাকে খুজে পাওয়া যায়নি।
বদলগাছী থানার ওসি মাহফুজ হক জানান, তিনি (আব্দুল বারি) ঢাকা ঢাকার শাহবাগ থানায় ১টি প্রতারনা মামলা এবং আদালতের আরো তিনটি মামলায় ওয়ারেন্ট ছিল। সেই গ্রেফতারী পরোয়ানা মুলে মঙ্গলবার রাতে বদলগাছী থানার পুলিশ তাকে খাদাইল বাজার থেকে গ্রেফতার করে বুধবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে সোপর্দ করা হয়।
ডেপুটি জেলার আবুল হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার ভোররাতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যা রাতে তার মৃত্যু হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন তাকে কোন শারীরিক নির্যাতন করা হয়নি।
এ ব্যাপারে কর্তব্যরত ডাক্তার ফারহানা বেগম সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, রোগীটি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। এখানে রোগীদের তুলনায় ডাক্তারের সংখ্যা খুবই কম। তাই কাঙ্খিত সেবা প্রদান করা প্রায়ই সম্ভব হয়না।
এ ব্যাপারে নওগাঁ সিভিল সার্জন ডা. সোলাইমান আল ফারুক জানান, তাকে সূচিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসার কোন ত্রুটি ছিল না।
এ ব্যাপারে নওগাঁ সদর থানার ওসি আমিনুর রহমান জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের হয়েছে।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/তন্ময় ভৌমিক/নওগাঁ