শাহারিয়ার রহমান রকি, ঝিনাইদহ

ধর্ষকের উন্মত্ত যৌন আচরণে পায়ুপথ ও যৌনাঙ্গের ক্ষত নিয়ে ৩ বছরের কনিকা (ছদ্ম নাম) ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রনায় ছটফট করছে।

ধর্ষণের পর ৩ দিন পার হলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে মামলা করতে সাহস পায়নি তার পিতা। এমনকি মামলা হলে গ্রামেও ফেরা অনিশ্চিত পরিবারটির। তাই সপরিবারে হাসপাতালেই সংসার পেতেছেন তারা।

ঝিনাইদহ মানবাধিকার সংস’ার কর্মী বিউটি আফরোজা জানান, ৩ জানুয়ারী ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ফুলহরি গ্রামের কনিকা খাতুন ঘুমানোর প্রস-ুতি নিচ্ছিল। প্রতিবেশি ইশারত আলীর লম্পট ছেলে সুমন (১৫) কনিকাকে ফুসলিয়ে বাড়ির পাশে নিয়ে যায়। সেখানেই কনিকার উপর চলে পাশবিক নির্যাতন।

তিনি আরো জানান, সুমনের হিংস্র উন্মত্ততায় কনিকার যৌন ও পায়ুপথ একাকার হয়ে যায়। জ্ঞান হারিয়ে ফেলে কনিকা। মুমুর্ষ অবস’ায় তাকে মঙ্গলবার রাতে ভর্তি করা হয় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে।

বিষয়টি যাতে মিডিয়ার নজরে না আসে সে জন্য কনিকার মা ও বাবাকে শাসিয়ে দেয় ধর্ষকের চাচা আসাদুল ইসলাম আশা।

বুধবার রাতে ঝিনাইদহের সাংবাদিকরা বিষয়টি জানতে পেরে ছুটে যান হাসপাতালে। সেখানে ভীত সন্ত্রস- কনিকার মা ভুল তথ্য দেয়। তাদের বাড়ি, ঠিকানা এমনকি কনিকার নামটিও লুকিয়ে ফেলে।

এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ মানবাধিকার সংস’ার ডার্কষ্টারের কর্মী ওবাইদুর রহমান ঘটনা সম্পর্কে বিস-ারিত তথ্য জানান।

তিনি বলেন, কনিকা ধর্ষিত হবার পর শৈলকুপার ফুলহরি গ্রামের সুবিধাবাদি কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি যাতে মামলা না হয় সে জন্য তদ্বীর ও প্রভাব খাটিয়ে যাচ্ছে।

ডার্কষ্টারের অনুসন্ধান মতে ফুলহরি গ্রামের হিটু মেম্বর, বাছের, জিয়া ও পাতাহার নামের ব্যক্তিরা কনিকার পরিবারকে মামলা না করতে হুমকী দিচ্ছেন।

বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে তারা র‌্যাব-৬ এর দারাস’ হয়েছে ডার্কষ্টার, জানান মানবাধিকার কর্মী ওবাইদুর রহমান।

বিষয়টি সম্পর্কে এলাকার চেয়ারম্যান ফিরোজ বিশ্বাস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ‘আমি এসব ঝামেলার মধ্যে নেই’। তবে শুনেছি ধর্ষনের ঘটনাটি সরকারী দলের স’ানীয় নেতারা মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করছেন। মামলা যাতে না হয় এ জন্য বৃহস্পতিবার সকালে ১৫ হাজার টাকাও দিয়েছে ধর্ষক সুমনের পিতা ইশারত আলী, জানান চেয়ারম্যান ফিরোজ।

এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ আহসান হাবিব জানান, ‘তিনি ধর্ষনের ঘটনা শুনেছেন। কিন’ এই দুই দিন শৈলকুপার বিভিন্ন স’ানে সংঘর্ষ-মারামারীর কারণে নির্যাতিতার বাড়িতে যেতে পারেনি। তিনি জানান সময় পেলে শুক্রবার ফুলহরি গ্রামে যাবার ইচ্ছা আছে’।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here