কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ অমান্য করে ইটভাটা মালিকরা প্রায় ২৫টি ইট ভাটায় সবুজ বৃক্ষ উজাড় করে প্রতিদিন মজুদ করা হচ্ছে লক্ষ্য লক্ষ্য মন জ্বালানী কাঠ। এসব ভাটা মালিকদের কেউ কেউ স্থায়ী চিমনির ঠুটো অযুহাত দেখিয়ে বৈধ মালিক সেজে ট্রাক ভর্তি করে প্রকাশ্যে মজুদ করছে এসব জ্বালানী কাঠ। পাশাপাশি সম্পূর্ন অবৈধ ড্রাম চিমনির মালিকরাও তাদের ভাটায় জ্বালানী হিসাবে কাঠ মজুদ করেছেন। দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকা বাজুডাঙ্গা, স্বরূপপুর, কল্যানপুর, জয়রামপুর, সাদীপুর, দৌলতপুর, রিফায়েতপুর, সংগ্রামপুর,দৌলতখালী, বড়গাংদিয়া, ডাংমড়কা, কায়ামারী, খলিসাকুন্ডি, ঝাউদিয়া ও চকদৌলতপুরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠা এসব ইটভাটায় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জ্বালানি কাঠের মজুদ গড়ে তুলেছেন ইটভাট মালিকরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রভাবশালী ইটভাটা মালিক বলেন, ম্যাজিষ্ট্রেট,ইউএনও,ডিসি থেকে শুরু করে সব অফিসারকেই টাকা দিয়ে কিনে রেখেছি। তাই হাজার হাজার মন অবৈধ জ্বালানী কাঠ পোড়ালেও আমাদের ইট ভাটা বন্ধ হবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন ইটভাটা মালিক জানান, বৈধ হোক আর অবৈধ হোক আমাদের ইটভাটায় প্রশাসনের লোকও যাবে না এবং জ্বালানি হিসেবে প্রতি বছরের ন্যায় এবার ও কাঠ বা খড়ি ব্যবহার করে ইচ্ছে মত ভাটা চালাবো তাতে প্রশাসনের লোক আমাদের কিছুই বলবে না। কারন দীর্ঘদিন ধরে একই নিয়মে ভাটা চালিয়ে আসছি, ইট পোড়ানো শুরুর আগে কত কিছু শোনা যায়, এটা না করলে এবার ভাটা চলবে না, ওটা না করলে ভাটা চালাতে দিবে না সরকার। তারপরও সবাইকে ম্যানেজ করে একই নিয়মে খড়ি দিয়েই তো ইটভাটা চালিয়ে আসছি। দীর্ঘ ১৫ বছরে যখন কিছু হয়নি, এবছরও কিছুই হবে না। ভাটা তার নিজস্ব গতিতেই চলবে বলে ওই ইটভাটা মালিক নিজের দম্ভোক্তি ব্যক্ত করলেন এভাবেই। ইটভাটায় কয়লা ব্যবহারের নির্দেশ থাকলেও সরেজমিনে কোন ইটভাটাতে কয়লার তিলমাত্র দেখা যায়নি। উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন জনবসতি এলাকায় মাত্র এক কিলোমিটারের মধ্যে আব্দুল হান্নান, নুরুল ইসলাম, আব্দুর সাত্তার, বজলুর রহমান কটা, ও আবু বক্কর বহাল তবিয়তে তাদের ইটভাটা চালাচ্ছেন। আবার উপজেলা পরিষদের বাউন্ডারী ঘেষা প্রকাশ্য এলাকায় লাখ লাখ মন খড়ির মজুদ দেখে সচেতন মহল হতবাক হলেও প্রশাসনের ভুমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। জনবসতি বা লোকালয়ে ইটভাটা গড়ে না তোলা, আবাদযোগ্য কৃষিজমি ইটভাটায় ব্যবহার না করা, জ্বালানি কাঠ ব্যবহার না করাসহ প্রায় ইটভাটা চালানোর ডজন খানেক সরকারী নীতিমালা থাকলেও এর কোনটিই মানা হচ্ছেনা কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে। এ ব্যাপারে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামালের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, ইটভাটায় কাঠ না পোড়ানোর জন্য সকল মালিক কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ নির্দেশ অমান্য করে তবে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/কাঞ্চন কুমার/কুষ্টিয়া

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here