ডেস্ক রিপোর্ট :: দেশের ৬৪ জেলায় নদী দখলদারের সংখ্যা প্রায় ৬৩ হাজার বলে হিসাব দিয়েছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের বিদায়ী চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার। মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদন-২০১৯ উপস্থাপনের সময় সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

প্রতিবেদন অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি নদী দখলদার খুলনা বিভাগে। সেখানে সংখ্যাটি ১১ হাজার ২৪৫ জন। আর উচ্ছেদ করা হয়েছে ৪ হাজার ৮৯০ জন অবৈধ দখলদারকে।

নদী দখলদারের সংখ্যা সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগে ২ হাজার ৪৪ জন। এই বিভাগে ২০১৯ সালে উচ্ছেদ করা হয়েছে ৫৭৬ জনের অবৈধ স্থাপনা। ঢাকা বিভাগে নদী দখলদারের সংখ্যা ৮ হাজার ৮৯০ জন; উচ্ছেদ করা হয় নদীর জমিতে থাকা ১ হাজার ৪৫২ জনের ৫ হাজার ৯৩৫টি স্থাপনা।

ঢাকা জেলায় বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতালক্ষ্যা, ইছামতি, বালু, বংশী, গাজীখালী, কালীগঙ্গাসহ মোট ১১টি নদী ও ২০১টি খালের উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে। ঢাকা জেলায় নদী দখলদারের সংখ্যা ৬ হাজার ৭৫৮ জন; উচ্ছেদ করা হয়েছে ৫ হাজার ৭৯৯ জনের স্থাপনা।

নারায়ণগঞ্জে নয়টি নদী ও ২১৮টি খাল রয়েছে। সেখানে নদী ও খাল দখলদারের সংখ্যা ৭৮৫ জন। মানিকগঞ্জ জেলায় নদীর সংখ্যা ১৬টি আর খাল ১১৭টি; দখলদারের সংখ্যা ১ হাজার ৩৯৯ জন। ফরিদপুর জেলা‌য় ১৩টি নদী ও ১৫টি খাল রয়েছে; দখলদারের সংখ্যা ১ হাজার ৮৩৪ জন। টাঙ্গাইল জেলায় নদী দখলদারের সংখ্যা ১ হাজার ৭৮৮ জন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ৬৪ জেলায় মোট ৫৭ হাজার ৩৯০ জন নদী দখলদারের ১৮ হাজার ৫৭৯টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। পর্যাপ্ত অর্থায়ন ও সক্ষমতা না থাকার কারণে জেলা প্রশাসন পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রত্যাশিত উচ্ছেদ অভিযান চালাতে পারেনি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত বছর উচ্ছেদ অভিযান বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানানো হয়।

নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মজিবুর হাওলাদার বলেন, চেষ্টা করেছি একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে। তবে অনেক প্রতিবেদন সময় মতো হাতে না পৌঁছানোয় পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে পারিনি।

১ হাজার ৪৫৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন তাদের কার্যাবলি, দেশের নদ-নদী পরিদর্শন ও পরিবীক্ষণ কার্যক্রম, প্রশাসনিক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি নদ-নদীর চিহ্নিত সমস্যা ও সমাধানে সুপারিশ, গৃহীত পদক্ষেপ ও অগ্রগতি তুলে ধরা হয়।

পুরানা পল্টনের হোসেন টাওয়ারে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে পতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, ব্র্যাক চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান, পরিবেশ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ, বাপার সাধারণ সম্পাদক শরিফ জামিল।

অনুষ্ঠানে বক্তারা নদী দলখমুক্ত করার পর রক্ষণাবেক্ষণের দিকে জোর দিতে সুপারিশ করেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here