রংপুর প্রতিনিধি :: 

সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাস ছাত্র-জনতার সংগ্রামের ফল। আজ নগরীর জেলা শিল্পকলা একাডেমী অডিটোরিয়ামে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’র মাধ্যমে জুলাই-আগস্টে রংপুর বিভাগের শহীদ পরিবারের মাঝে আর্থিক সহযোগিতার চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে স্বাধীনতা পেয়েছি, দেশ পেয়েছি ও পতাকা পেয়েছি। কিন্তু সাম্য, ন্যায় বিচার ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণ হয়নি’।

উপদেষ্টা বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মুক্তিযোদ্ধারা ন্যায্যতা পাননি। তাদেরকে দেশ গড়ার কাজে লাগানো হয়নি, যা ছিল অন্যায়। কিন্তু ২০২৪-এর বেলায় জাতির বীর সন্তানদের চিহ্নিত করে মর্যাদা দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, জুলাই-আগষ্টে আহত-নিহতদের তালিকা  তৈরী করা হচ্ছে। একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বাহক বর্তমান ২৪-এর বীর মুক্তিযোদ্ধারা, তারা মুক্তিযুদ্ধের ধারা। একেবারে স্বচ্ছভাবে তালিকা করা হচ্ছে। যার কারণে কিছুটা সময় লাগছে।

শারমিন এস মুরশিদ বলেন, কেউ কেউ ভাবছেন, শহীদ আবু সাঈদের গল্প বলে আমরা অন্য শহীদদের ভুলে যাচ্ছি, তারা এটা ভুল ভাবছেন। আমরা এটা করছি না। শহীদ আবু সাঈদ একটা সিম্বল হতে পারে, তিনি সকলকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। আমরা আপনাদের সকলের কাছে পৌঁছাতে চাই। এ জন্য সময় লাগছে। আমাদের কথায় ও কাজে ভুল হতে পারে এ জন্য আমাদের উপর রাগ করবেন, সমালোচনা করবেন এবং তিরস্কারও করবেন। কিন্তু মুখ ফিরিয়ে নিবেন না। কারণ আমরা অন্তর থেকে আপনাদের পাশে আছি। আমরা ভুল শুধরে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। জুলাই-আগস্টে নিহত-আহত এবং যারা জয়ী হয়ে জীবন নিয়ে ফিরে এসেছেন, তাদের সকলের পাশে থাকার দৃঢ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

এদিকে একই অনুষ্ঠানে মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, এই রংপুরের শহীদ আবু সাঈদ বাংলাদেশকে সারা বিশ্বে সাহসের প্রতীক হিসেবে পরিচিত করিয়েছেন। আবু সাঈদ সারা বিশ্ববাসীর মধ্যে জাগরণ সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন। সকলে জুলাই-আগস্টকে ভুলে গেলেও শহীদ পরিবারগুলোর কথা কোনদিন ভুলতে পারবে না। শহীদদের রক্তের বিনিময়ের স্বাধীনতাকে টিকিয়ে রাখতে হবে বলে তিনি তরুণ সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে রংপুর বিভাগে শহীদ হওয়া ৬৫ জনের মধ্যে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ৪৪ জন শহীদের পরিবারকে  পাঁচ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ করা হয়। পর্যায়ক্রমে বাকি শহীদ পরিবারের নিকট এ সহায়তা প্রদান করা হবে বলে জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত ও জুলাই বিপ্লবে নিহতের স্মরণে নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সিইও মীর মাহবুব আলম স্নিগ্ধের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরিফ উদ্দিন, শহীদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়’র মা শামসি আরা জামান কলিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here