ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডেস্ক ::
যারা আন্দোলনের নামে দেশকে অচল করতে চায় তাদের জানা উচিত ১৯৭১ সালে ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের মহান স্বাধীনতা দেশকে সচল করার জন্যই হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আন্দোলন এবং সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে দেশের স্বাধীনতা অর্জন থেকে এ পর্যন্ত এসেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আওয়ামী লীগ ছাড় দিচ্ছে দেশের মানুষের শান্তির জন্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে আন্দোলনের নামে জনদুর্ভোগ ও অগ্নি সন্ত্রাস কোনভাবেই সহ্য করা হবে না।
তিনি আজ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবনে মেয়র মোঃ হানিফ মিলনায়তনে বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের সাথে ডেংগু প্রতিরোধ ও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম জোরদারকরণ বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম, সভাপতিত্ব করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
মোঃ তাজুল ইসলাম ডেংগু প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন ও সচেতনতার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এ ক্ষেত্রে পাড়া মহল্লা ভিত্তিক ডেংগু প্রতিরোধ ও পরিচ্ছন্নতা কমিটি গঠন করে সমাজের সকল স্তরে ডেংগু মশা যাতে প্রজনন করতে না পারে, লার্ভা বিস্তার না করে সে জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। এ সময় শুক্রবারের খুৎবায় এডিস মশা ও ডেংগু প্রতিরোধ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার বিষয়ে মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের আহবান জানান তিনি। এছাড়াও বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকদেরও ডেংগু প্রতিরোধে ছাত্রছাত্রীদের উদ্বুদ্ধ করার অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যেহেতু উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে ডেংগু সারা বছর সংক্রমণের সম্ভাবনা সারা বিশ্বের বৃদ্ধি পাচ্ছে তাই আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদেরকেও ডেঙ্গু সচেতন করা অপরিহার্য।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু রোগ শুধু আমাদের দেশে আছে তা নয়, এটা অন্যান্য দেশেও আছে। সকল ট্রপিক্যাল কান্ট্রি, সকল দেশেই এই রোগ আছে। সুতরাং বহির্বিশ্বের প্রেক্ষাপটে আমাদের কর্মপরিকল্পনা যেভাবে সাজিয়েছি, এটি সারা বিশ্বে স্বীকৃত।
এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ঢালাওভাবে ডেঙ্গু প্রতিরোধ বিষয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করা হয় উল্লেখ করে বলেন, গত ২২ শে জুলাই ২০০২৩ সাল থেকে ২ হাজারের ঊর্ধ্বে রোগী পাওয়া যাচ্ছে। ২২ তারিখে সারা বাংলাদেশে ২ হাজার ২৪২ জন রোগী পাওয়া গেছে। সেখানে আমাদের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৫৫ জন রোগী আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। ১৫৫ জনের ঠিকানাতে, স্থাপনাতে কার্যক্রম (ডেঙ্গু রোগীর আবাসস্থল ও তৎসংলগ্ন আশপাশের ৪০০ গজের মধ্যে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে) নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও অন্যান্য স্থাপনাতেও কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। ২৩ তারিখে দেশব্যাপী রোগী ছিল ২ হাজার ২৯২ জন। সেখানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ১২২ জন। ২৪ তারিখে সারাবাংলাদেশ ২ হাজার ২৯৩ জন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার রোগী ১৩৩ জন। ২৫শে জুলাই সারাদেশে ২ হাজার ৪১৮ জন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এলাকায় ১২২ জন। ২৬ শে জুলাই সারাদেশে ২ হাজার ৬৫৩ জন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১২৩ জন। ২৭শে জুলাই সারাদেশে ২ হাজার ২৬১ জন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ১০০ জন।
মেয়র বলেন, আমাদের কার্যক্রম যে সফল হয়েছে, ঢাকাবাসী যে সুফল পাচ্ছে, এটি তারই নিদর্শন। আমরা এই পর্যায়ে আমাদের রোগীর সংখ্যা ১০০-১৫০ এর ঘরে রাখতে পেরেছি। এটা সম্ভব হয়েছে আমাদের সকল কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে আমাদের কর্মীবাহিনী নিরলস পরিশ্রম করছে।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান। এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির ঢাকা দক্ষিণে ডেংগু প্রতিরোধে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের উপর সচিত্র পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন। ঢাকা দক্ষিণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা কাজের সাথে যুক্ত ম্যাজিস্ট্রেটদের পক্ষে বক্তব্য কালে এস.এম. মনজুরুল হক জানান, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে, থানা, বাসাবাড়িতে ডেংগু মশার লার্ভা পাওয়া গেছে যা হতাশাজনক। এ সময় তিনি পাড়া মহল্লা ভিত্তিক ডেংগু প্রতিরোধ ও পরিচ্ছন্নতা কমিটি ও তাদের নিজস্ব ফগিং মেশিন থাকার উপর গুরুত্বারোপ করেন।