আতিফ কাদির: জামালপুরের প্রান্তিক স্টেশন দেওয়ানগঞ্জ বাজার হতে ঢাকাগামী জনপ্রিয় ট্রেন ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস। দেওয়ানগঞ্জ অভিমুখী ৭৪৩ নং আপ ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস বর্তমানে সন্ধ্যা ৬.১৫ মিনিটে ঢাকা ত্যাগ করে গন্তব্য স্টেশন দেওয়ানগঞ্জ বাজার স্টেশনে পৌছায় রাত ১১.৫০ মিনিটে। আবার ৭৪৪ নং ডাউন ট্রেনটি দেওয়ানগঞ্জ বাজার স্টেশন হতে সকাল ৬.৪০ মিনিটে ছেড়ে ঢাকা পৌঁছায় দুপুর ১২.৪০ মিনিটে।
এই টাইমটেবল কার্যত রেলওয়ের অফিশিয়াল বই-খাতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এ ট্রেন ৯০শতাংশ সময় মেনে চলেনা। ‘লোকমোটিভ’ বা ইঞ্জিনের অভাবে ঢাকা হতে ছাড়তে দেরি হয়। যার ফলে ট্রেনটির পৌঁছাতে রাত ১ টা বা এর চেয়েও বেশি সময় লাগে।সআর সাথে আছে ক্রসিং বিড়ম্বনা, খারাপ লাইন। বর্তমানে ট্রেনটির কোচগুলোর অবস্থা বেহাল, অনেক কোচে জানালা কাজ করে না। নেই টয়লেটে পর্যাপ্ত সুবিধা। চেয়ারগুলোর অবস্থা বেহাল, সিটও আরামদায়ক নয়।
কিন্তু এই ট্রেনটিই হলো জামালপুর, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চল এবং উত্তরবঙ্গের ভরসার প্রতীক। বর্তমানে এ ট্রেন ব্যবহার করে থাকেন কুড়িগ্রামের রৌমারি, গাইবান্ধা, বগুড়ার বাসিন্দারাও। আগে এই ট্রেনটি রাত ২টা ৩০মিনিটে দেওয়ানগঞ্জ বাজার ছেড়ে সকালে ঢাকা পৌঁছাতো। ফলে অনেক চাকুরিজীবী অফিস করে আবার সন্ধ্যায় ফিরে আসতে পারতেন। বর্তমানে সময় পরিবর্তনের ফলে তা আর সম্ভব নয়। আগে এ ট্রেনটি ”একতা এক্সপ্রেস” নামেই ঢাকা-দিনাজপুর পর্যন্ত চলাচল করতো।
ট্রেনটির ছিল একটি গৌরবময় ইতিহাস, সেই একতা এক্সপ্রেস পরিচিত ছিল একরকমের স্বল্প বিরতির ট্রেন হিসেবেই,বর্তমানে সেই যুগ আর নেই,অতিরিক্ত যাত্রাবিরতী,ক্রসিং বিড়ম্বনা,সিংগেল লাইন ও লাইনের বেহাল অবস্থার ফলে মরতে বসেছে ও জৌলুস হারিয়েছে ৩৬ বছর পুরনো এই ঐতিহাসিক ট্রেনটি।অথচ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ট্রেনটি আবারও হয়ে উঠতে পারে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের একটি জনপ্রিয় ট্রেন। বর্তমানে ইন্দোনেশিয়া হতে আমদানিকৃত প্রায় ৪৬টি কোচ চট্টগ্রাম মার্শালিং ইয়ার্ডে প্রস্তুত রয়েছে বিভিন্ন রুটের আন্তঃনগর ট্রেনের পুরাতন কোচগুলোকে বদল করার জন্য। এর মধ্য হতে কিছু ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেসে প্রতিস্থাপন করলে হয়তো আবারও সেই হারানো জৌলুস ফিরে পাবে ট্রেনটি।